৬৫ বছরের ব্যবধানে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছালেন কোনও উত্তর কোরীয় শীর্ষ নেতা। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় (বাংলাদেশ সময় ৬.৩০) বিরল সফরে নয় সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছান উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম। এরইমধ্যে দক্ষিণ কোরীয় নেতা মুন জায়ে ইন-এর সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকে বসেছেন তিনি। স্থানীয় সময় তিনি দুই কোরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চল পানমুনজামে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। পরে দুই নেতা পানমুনজামের নিরপেক্ষ এলাকায় স্থাপিত বিশেষ মঞ্চে যান। সেখানে তাদের গার্ড অব অনার জানায় দক্ষিণ কোরিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল। আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল সাড়ে দশটায় দক্ষিণ কোরিয়ার পিস হাউসে আলোচনায় বসেছেন তারা।
১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধ অবসানের ৬৫ বছর পর এবারই প্রথম কোনও উত্তর কোরীয় রাষ্ট্রনায়ক আলোচনার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছালেন। এর আগে দুই কোরিয়ার নেতারা দুইবার আলোচনায় বসলেও দুইবারই সেই আয়োজন হয়েছিল পিয়ংইয়ং এ। এবারের বৈঠকের পুরো পরিকল্পনা আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে নয়টায় দুই কোরিয়ার নেতা সীমান্তে উপস্থিত হয়ে হাত মেলান। দক্ষিণ কোরিয়ায় কিম জং উন পা রাখার পর দুই নেতা সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এরপরই কিমের অনুরোধে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়ান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। পরে তারা অনুষ্ঠান মঞ্চে হাজির হন।
আনুষ্ঠানিতকা শেষে সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া আলোচনা চলবে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির আগ পর্যন্ত। বিরতিতে দুই নেতা নিজেদের দেশে ফিরে যাবেন। নিজ দেশে মধ্যাহ্নভোজনের পর বিকেলে দুই নেতা দুই কোরিয়ার মাটি ও পানি ব্যবহার করে একটি পাইন গাছের চারা রোপণ করবেন। শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে এই চারা লাগানোর পর দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসবেন দুই নেতা। সম্ভাব্য চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হবে আলোচনা। এরপর দুই নেতা দক্ষিণ কোরিয়ায় রাতের খাবারে অংশ নেওয়ার আগে একটি যৌথ বিবৃতি দেবেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার আয়োজিত এই রাতের খাবারের মেন্যু আগেই জানানো হয়েছে। খাবারে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের পছন্দের খাবার সুইস পটেটো ডিশ রোসটো থাকবে তাতে। পড়াশোনার জন্য সুইজারল্যান্ডে থাকার সময়ে এই খাবার পছন্দ করতেন তিনি। এছাড়াও আয়োজনে থাকবে উত্তর কোরিয়ার বিখ্যাত ঠাণ্ডা নুডলস ও পানীয়।
রাতের খাবারের পর নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আগে দুই দেশের প্রতিনিধিরা এক সাথে বসে ‘স্প্রিং অব ওয়ান’ নামে একটি ভিডিওচিত্র দেখবেন।