পাকিস্তানের এক অটোওয়ালা, অটো চালিয়ে দিন চালান কোনোক্রমে। একদিন তিনি চমকে উঠলেন। তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। প্রথমটায় নিজের চোখকেই বিশ্বাস হচ্ছিল না। পরে, ভালভাবে দেখলেন ব্যাংকের বই। ভয়ে কাঁপতে শুরু করলেন পাকিস্তানের অটোচালক মহম্মদ রশিদ।
ব্যাংকের বইয়ে চোখ বোলাতেই চমকে ওঠেন রশিদ। ঠিক দেখছেন তো? একটু ধাতস্থ হয়ে তিনি আবার ভাল করে বইটা পরীক্ষা করে দেখলেন। নাহ! তিনি ঠিকই দেখেছেন। কিন্তু এটা সম্ভব হল কী ভাবে? বাড়ি ফিরে কী করবেন ভেবে পেলেন না।
ঘটনাটা শুনেই চমকে যান তাঁর স্ত্রী’ও। এতগুলো টাকা, কোথা থেকে এল একজন দিন আনা- দিন খাওয়া অটোওয়ালার অ্যাকাউন্টে? আনন্দ নয়, আশঙ্কাই যেন পুরো পরিবারটাকে গ্রাস করে ফেলল মুহূর্তে।
রশিদের অবশ্য বিষয়টা বুঝতে খুব একটা সময় লাগেনি। আর সে কারণেই আতঙ্কে কুঁকড়ে গিয়েছিলেন তিনি।যে আশঙ্কাটা করেছিলেন শেষমেশ সেটাই হল। ফেডারেল ইনভেসটিগেশন এজেন্সি থেকে রশিদের কাছে ফোন আসে। ফোন পাওয়া মাত্রই রশিদ গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের লোকেরা তাঁকে বোঝান তদন্তকারীদের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য। রশিদ রাজিও হয়ে যান।
রশিদ এক সাক্ষাত্কারে বলেন, “কোনও তদন্তকারী সংস্থা যদি আমাকে তুলে নিয়ে যায় সেই ভয়ে অটো চালানোই বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আতঙ্কে আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন।”
তবে রশিদ একা নন। তাঁর মত বহু গরিব মানুষের অ্যাকাউন্টেই ‘ভূতুড়ে’ টাকা এসে জমা পড়ছে। তার পর সে টাকা গায়েবও হয়ে যাচ্ছে। রশিদের মতো একই অবস্থা হয়েছিল শারওয়াত জেহরা নামে এক ব্যক্তির। তাঁর অ্যাকাউন্টেও কয়েকশো কোটি টাকা জমা পড়েছিল। পাকিস্তানে কালোটাকার কারবারিদের ধরতে নানা রকম পদক্ষেপ নিচ্ছেন নয়া প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত বুধবারেই তিনি বলেছিলেন, “কালোটাকার কারবারিদের কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না।” রশিদদের মতো গরিব মানুষদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান থেকে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে।
সম্প্রতি, ইমরান খান এক সভায় বলেন, “এটা আপনাদের চুরি যাওয়া টাকা। এই টাকা চুরি করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো কাজে লাগিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করা হচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রীর সেই কথা শুনেছিলেন রশিদ। তাই ৩০০ কোটি টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢোকার পর থেকেই আতঙ্ক ঘিরে ধরে।