ডিএমপি নিউজ: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) মীর রেজাউল আলম, বিপিএম(বার) (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী সারদার, প্রিন্সিপাল পদে পদায়ন হওয়ায় তাঁকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে ডিএমপি পরিবার।
আজ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি.) সন্ধ্যায় ডিএমপি হেডকোয়াটার্সে এ বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম(বার), পিপিএম। অনুষ্ঠানে তিনি বিদায়ী সহকর্মীকে ফুলেল শুভেচ্ছা, সম্মাননা স্মারক ও শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন।
বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণ বিদায়ী কর্মকর্তার সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতার বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
ডিএমপির দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা ও সহকর্মী পদোন্নতিপ্রাপ্ত মীর রেজাউল আলম বিপিএম-বার কে ডিএমপি পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ডিএমপিতে চাকরি করে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে সফলতা ও দক্ষতার পরিচয় দেওয়া এক কথায় অসাধারণ। কমিশনার হিসেবে যোগদান করার পর আমি প্রতিটি কাজে তার পরামর্শ গ্রহণ করেছি। আমি যখন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক ছিলাম তখনও আমি তার কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতাম। কারণ একদিকে তার দক্ষতা ও যোগ্যতা অন্যদিকে ডিএমপিতে কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা। এছাড়া তিনি সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্য পরামর্শটাই সব সময় দিয়ে থাকেন।”
কমিশনার বলেন, সারদার পোস্টিংটা অনেক সম্মানের ও ক্ষমতার। কারণ, সারদা হলো বাংলাদেশ পুলিশের সূঁতিকাগার। এখান থেকেই পুলিশের জন্ম হয়। এসময় পুলিশের ট্রেনিং ম্যানুয়াল পরিবর্তনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের পরামর্শ দেন তিনি।
বিদায়ী অতিথি ডিএমপির দীর্ঘপথ চলার সহযোদ্ধা অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম বিপিএম(বার) (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) বলেন, আমি ডিএমপির কাছে অনেক অনেক ঋণী, কেননা আমার সকল প্রাপ্তি, অর্জন সব এখান থেকেই। টিম ডিএমপির যে কাজের গতি সেটা আমি এখান থেকেই শিখেছি। ডিএমপি সব সময় আমাকে মায়ার জালে আবদ্ধ করে রাখবে।
বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম (বার); অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) ড. খঃ মহিদ উদ্দিন বিপিএম-বার; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান; অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মোঃ আসাদুজ্জামান বিপিএম(বার); যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, গত ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ খ্রি. রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মীর রেজাউল আলম বিপিএম (বার)-সহ পুলিশের ৪ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (গ্রেড-২) পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ খ্রি. রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আরেক প্রজ্ঞাপনে পুলিশের এ কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা, রাজশাহী প্রিন্সিপাল হিসেবে পদায়ন করা হয়।
পুলিশের এই আইকনিক কর্মকর্তা মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার চৌগাছি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং দুই পুত্র সন্তানের জনক।
চাকরি জীবনে অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন দক্ষ ও পেশাদার এই পুলিশ কর্মকর্তা। অপরাধ দমনে কাজ করতে গিয়ে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। দেশের সীমানা ছাপিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কসোভো ও লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে আনেন। কর্মজীবনে স্বীকৃতি হিসেবে একাধিকবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও আইজিপি ব্যাজ পেয়েছেন।
তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রশাসন ও ট্রাফিক, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক, ক্রাইম অ্যান্ড অপস্, অপারেশনস্ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপারসহ বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে তিনি অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।