ডিএমপি নিউজ: বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-মোঃ হেমায়েত খান ওরফে হায়দার (৪১), মোঃ শাহীন আলম (৪৫) ও জামাল উদ্দিন (৩৫)।
গ্রেফতারের পর তাদের হেফাজত থেকে আন্তর্জাতিক যুব সংস্থার বিভিন্ন পদে নিয়োগের সিইও’র স্বাক্ষর করা ৩৫টি ভুয়া নিয়োগপত্র, কমিউনিটি স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্পের ভুয়া সিলেকশন ফরম ৫০টি, হিউম্যান রিসার্স প্রাইমারি হেল্থ কেয়ার সেন্টারের সিলেকশন ফরম ৮৫টি, আন্তর্জাতিক যুব সংস্থার বিভিন্ন লোকের ছবিসহ স্বাক্ষরিত ৩৫টি আইডি কার্ড ও খালি আইডি কার্ড ৬০টি, ডাক বিভাগের রেজিস্ট্রি রশিদ ৩০টি ও ঠিকানা লেখা হলুদ খাম ২০টি, আন্তর্জাতিক যুব সংস্থার স্বাস্থ্য কার্ড ১১০টি, বাংলাদেশ পপুলেশন এন্ড হেল্থ কেয়ার প্রোগ্রাম (বিপিএইচসিপি) ফরম ২০০টি, শ্যামল ছায়া এনজিও এর নামে ৪টি ফটোকপি বুকলেট, ১টি আইডি কার্ড যাতে আজকের আলোকিত সকাল ও মোঃ হেমায়েত খান হায়দার লেখা আছে, নগদ সর্বমোট ১০ হাজার ৪ শত টাকা এবং ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে এই প্রতারক চক্রটিকে গ্রেফতার করা হয়। উক্ত অভিযোগকারী এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার সিটি সেন্টারে একটি আইসিটি ফার্মে কাজ করেন। তিনি বিডি জব ডটকম অনলাইনের মাধ্যমে জানতে পারেন আন্তর্জাতিক যুব সংস্থার সুপারভাইজার ও কেন্দ্র ভিজিটর পদে লোক নিয়োগ করা হবে। সে মোতাবেক তিনি অনলাইনে ফরম পূরণ করেন।
গত ২০ অক্টোবর, ২০১৭ তার মোবাইল ফোনে একটি এসএমএস আসে যাতে বাংলাদেশ পপুলেশন এন্ড হেল্থ কেয়ার প্রোগ্রামে ভাইভা বোর্ডে ২৪ অক্টোবর হাজির থাকার জন্য বলা হয়। ২০ অক্টোবর, ২০১৭ বেলা ১২.৫৩ টার সময় তাকে মোবাইল ফোনে বলা হয় ভাইভা দেওয়ার জন্য উত্তরা ৯নং সেক্টরের ৭/বি রোডের ৪/বি বাসার ৩য় তলায় আসার জন্য। তার প্রেক্ষিতে তিনি ২৪ অক্টোবর’ ১৭ সকাল ৯ টার সময় ভাইভা দেওয়ার জন্য উক্ত অফিসে হাজির হন।
অভিযুক্ত শাহিন আলম তার ভাইভা পরীক্ষা নেয় এবং তিনি সুপার ভাইজার পদে সিলেকশন হয়েছে বলে জানায়। তারপর তাকে ১৫০০ টাকা দিতে বলে। তিনি তার কাছে থাকা ৫০০ টাকা তাদেরকে দেয়। বাকি টাকা তাদের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে পাঠাতে বলে।
উক্ত অফিসের কার্যক্রম দেখে তার মনে সন্দেহ হয়। অফিসে আরো ১০/১২ জন ভাইভার জন্য অপেক্ষা করছিল। তাই তিনি প্রতিবাদ না করে চলে যান উত্তরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার তাপস কুমার দাসের নিকট। তার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন তিনি। তার অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি উত্তরা পশ্চিম থানার টহল পুলিশের একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠান । টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অভিযুক্ত হেমায়েত খান সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে হুমকি প্রদান করে। অফিসের কাগজপত্র দেখতে চাইলে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারে না। সেসময় সর্বশেষ ভাইভার জন্য আসা মাহবুবা জান্নাত মাহী ও নাজমুন নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তারা জানায় তাদের কাছ থেকেও একইভাবে টাকা গ্রহণ করে প্রতারকরা। ঘটনাস্থল থেকে প্রতারকচক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- গ্রেফতারকৃতরা ও তাদের অন্যান্য পলাতক সহযোগীরা মিলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ দিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বেকার যুবক-যুবতীদের নিকট থেকে প্রতারণা পূর্বক টাকা আত্মসাৎ করত।