অবরুদ্ধ কাশ্মীরে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সংবাদকর্মীরা। টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় একপ্রকারে মুখ বন্ধ গণমাধ্যমের। কাশ্মীরের খবর বাইরে পাঠানো বা বাইরের খবর ভেতরে পৌঁছানোর কার্যত সব দরজাই বন্ধ।
এরমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে একটি মিডিয়া সেন্টার খোলা হলে কিছুটা আশার আলো দেখতে পান গণমাধ্যমকর্মীরা। কেন্দ্রের চারটি কম্পিউটার ও একটি মোবাইল ফোনই খবর পাঠানোর একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠে তাদের কাছে। তবে, শত শত সাংবাদিকদের জন্য এ সংখ্যাটি একেবারেই নগণ্য। তাছাড়া, ইন্টারনেটের গতিও অতিমাত্রায় কম। একটি সাধারণ ফাইল আপলোড হতে সময় নেয় ঘণ্টাখানেক। তার ওপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা– দু’টি কম্পিউটার বেশিরভাগ সময় দখলে রাখছেন সরকারের তথ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
শনিবার (১৭ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮–এর এক বিশেষ প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়েছে।
জম্মু–কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের জেরে গত ৫ আগস্ট থেকে অবরুদ্ধ কাশ্মীর উপত্যকা। ওই দিন থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা। সবার আগে এর প্রভাব পড়ে খবর আদান–প্রদানে। বিশেষ ইন্টারনেট লাইনগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার।
দুই দিন ধরে একটা খবরও আদান–প্রদান করতে পারেননি স্থানীয় সাংবাদিকরা। শুধু যেসব টেলিভিশন চ্যানেলের আউটডোর ব্রডকাস্টার (ওবি) ভ্যান রয়েছে, সেগুলো দিয়ে কিছু খবর উপত্যকার বাইরে পাঠানো সম্ভব হয়। বাকি সাংবাদিকদের অফিসের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ ছিল না। তারা মরিয়া হয়ে উঠছিলেন। এ পরিস্থিতিতে প্রথমবারের মতো কাশ্মীরের বড় খবরগুলো বাইরে আসে যখন, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কিছু কর্মী ফ্লাশড্রাইভে খবর দিয়ে একজনকে প্লেনে করে দিল্লি পাঠান।
অন্তত এক সপ্তাহ ধরে বেশিরভাগ সাংবাদিকই এ পথ অনুসরণ করেছেন। লিখিত খবর পড়ে রেকর্ড করে তা সহযোগী চ্যানেলের ওবি ভ্যানের সাহায্যে পাঠাতে থাকেন অনেকেই। মূল অফিসে সেসব খবর শুনে ফের টাইপ করে প্রকাশ করা হতো।
কাশ্মীরে নিযুক্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগের পথ না পেয়ে তাদের খোঁজে লোকও পাঠায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন স্থানীয় প্রতিনিধিকে খুঁজে পাননি বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, দিল্লি থেকে কিছু সাংবাদিক এসেছেন, যারা নিজেদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারছেন। তারা সহজেই টুইটার ব্যবহার করছেন। শুধুমাত্র সরকারের সমালোচনা করছেন না আর তাদের বক্তব্যের প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে এসব সাংবাদিকদের হেলিকপ্টারে করে আনা–নেওয়া হচ্ছে। বাংলানিউজ২৪