ডিএমপি নিউজঃ সমাজের মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনতে এবং মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে মাদক ও জঙ্গী বিরোধী সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগ।
২৯ এপ্রিল’১৭ শনিবার বিকাল ৩ টায় রাজধানী সরকারি তিতুমীর কলেজ মাঠে মাদক প্রতিরোধের পাশাপাশি এই অসাধু ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের পুনর্বাসনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগ এর উদ্যোগে এ সমাবেশে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা ৫০ জন ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীকে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে প্রত্যেককে একটি করে সেলাই মেশিন ও চার হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এছাড়াও আরও ২০০ জন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ায় আছে।
উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতউল্লাহ, ইন্সপেক্টর জেনারেল বাংলাদেশ পুলিশ এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম, পিপিএম। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন- জঙ্গি ও মাদককে নিয়ন্ত্রনের জন্য আমাদের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। আমরা যেখানে জঙ্গিদের আস্তানার খবর পেয়েছি সেখানে সফল অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গিদের দমন করেছি। জঙ্গি বিরোধী অভিযানে আমরা কিছু চৌকস অফিসার হারিয়েছি। আমাদের দেশে যার যার ধর্ম সেই পালন করে। এখানে কোন ভেদাভেদ নেই। বাংলাদেশে আইএস বলে কোন কিছু নেই। তারপরও কিছু সাইট এটাকে আইএস বলে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি আরও বলেন- সারা দেশের মানুষ একসুরে জঙ্গি ও মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ৭৫ সালের পর থেকে এদেশে বিভিন্ন নামে জঙ্গিরা তৎপরতা চালিয়ে আসছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইজিপি বলেন- জনগন দেশের মালিক। জনগনের শক্তিই বড় শক্তি। আমরা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। জনগনের সাহায্য ও সহযোগিতা ছাড়া অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়। জঙ্গি ও মাদকে জড়িয়ে পড়ার কারণ আমাদের জানতে হবে। আপনার সন্তানের আচার ব্যবহারের কোন পরিবর্তন আছে কি না, আপনার সন্তান কার সাথে মিশছে অভিভাবকদের প্রতি তা দেখার আহবান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন- মাদক ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সারাদেশ ব্যাপী নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে। যদি কোন পুলিশ সদস্য মাদক ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজ যাদের পূনর্বাসন করা হয়েছে তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেন আইজিপি। যাতে করে তারা পুনরায় এ পেশায় না আসতে পারে।
জঙ্গি ও মাদক ব্যবসীদের সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার বলেন- আজকে আমাদের জাতীয় শত্রু সন্ত্রাস, জঙ্গি ও মাদক।এর বিরুদ্ধে আমরা এক কাতারে দাঁড়িয়েছি। সকল শ্রেণীর মানুষ আজ মাদক ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এক হয়েছে। আমরা জীবন দিয়ে এদেশের মানুষকে রক্ষা করে যাবো।বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ও জঙ্গির ঠাঁই হবে না।
তিনি আরও বলেন- আজকে যারা মাদক ব্যবসা করে মাদকের সাথে জড়িত তারা জঙ্গির চেয়েও কম অপরাধী না।সুতরাং মাদকের সাথে কোন বন্ধুত্ব না। সমাজ থেকে তাদেরকে উৎখাত করতে হবে। নাগরিক ঐক্য ছাড়া মাদককে নির্মূল করা সম্ভব না। মাদকের বিরুদ্ধে চাই পাড়ায়-পাড়ায় মহল্লায়-মহল্লায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা।
কমিশনার বলেন- আমরা ‘সিআইএমএস সফটওয়্যার’ এর মাধ্যমে ঢাকার প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য সংরক্ষণ করেছি। কোন ব্যক্তি অপরাধ করে পার পাবে না। ‘সিআইএমএস সফটওয়্যার’ এ তথ্য হালনাগাদ করতে সাহায্য করায় ঢাকাবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান ডিএমপি কমিশনার। আপনাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের। যদি কেউ জনগণের নিরপত্তা বিঘ্ন করার চেষ্টা করে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করবো।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ জামিল আহমেদ ও গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম মোস্তাক আহমেদ বিপিএম, পিপিএমসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।