বছর খানেক আগে স্বামী মারা গেলে নিঃসন্তান রূপবাহার অর্ধাহারে-অনাহারে জীবন যাপন করছিলেন রূপবাহার। খবর পেয়ে গত জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ তাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঝুপড়ি ঘর থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান এএসআই আবুল কালাম আজাদ। অসহায় বৃদ্ধার প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আহবান জানান বৃদ্ধার পাশে দাঁড়ানোর। সেই আহবানে সাড়া দিয়ে উপজেলা প্রশাসন রূপবানকে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড ও কিছু নগদ সাহায্য প্রদান করে।
কিন্তু এতটুকু করে বৃদ্ধাকে ভুলে যাননি এএসআই আজাদ। নিজের ভবিষ্যত কল্যাণ তহবিলের পঞ্চাশ হাজার টাকা উত্তোলন করে উদ্যোগ নেন বৃদ্ধাকে একটি বাড়ি বানিয়ে দেয়ার। এএসআই আজাদ ডিএমপি নিউজকে মুঠোফোনে জানান, কাজে নেমে দেখেন আরো অর্থ দরকার। কিন্তু পিছিয়ে যাবার কথা ভাবেননি একবারও ।এগিয়ে আসেন তার স্ত্রী। শেষে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে অর্থের সংস্থান করে রঙিন টিনের চারচালা একটি ঘর নির্মাণ করে দেন রূপবাহারকে। ঘরের পাশে তৈরি করা হয়েছে ফুলের বাগান। শুধু বাড়ি নির্মাণ নয়, বৃদ্ধার ব্যবহারের জন্য খাট, চেয়ার ও অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রও কিনে দেন আজাদ।
পুলিশের অর্থে রূপবাহারের আদর্শ বাড়ি নির্মাণের বিষয়টি প্রশংসিত হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. মঞ্জুর কাদের এএসআই আজাদের প্রশংসা করে বলেন, রূপবাহার ছাড়াও এর আগে বেগম নামের এক মহিলাকে ময়লার স্তূপ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে নিজ খরচে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া একটি নবজাতককে উদ্ধার করে এক প্রবাসীর কাছে লালন-পালন করার দায়িত্ব দিয়েছেন।
এএসআই আজাদের এই মানবিক কাজ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে সবার কাছে। পুলিশের ভাবমূর্তি উন্নয়নেও এটি একটি নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে বলে নিশ্চিতভাবে বলা যায়।