আউটসোর্সিং বন্ধ করতে ফের বিল পেশ হল মার্কিন কংগ্রেসে। সে সব মার্কিন সংস্থা আউটসোর্সিং-এর উপর নির্ভর করে অর্থাৎ অন্যান্য দেশে কর্মসংস্থান ছড়িয়ে দিয়ে কম খরচে কাজ করিয়ে নেয়, সেই সংস্থাগুলির উপর খাঁড়া নামিয়ে আনার সংস্থান রয়েছে এই বিলে। শাসক রিপাবলিকান এবং বিরোধী ডেমোক্র্যাটিকরা যৌথ ভাবে এই বিল পেশ করেছে। বিলটি পাশ হলে আউটসোর্সিং নির্ভর মার্কিন সংস্থাগুলি সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। সেই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সংস্থাগুলি আউটসোর্সিং বন্ধ করে দিলে ভারত-সহ বেশ কয়েকটি এশীয় দেশে বহু মানুষ কাজ হারাবেন।
মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্য জিন গ্রিন এবং রিপাবলিকান সদস্য ডেভিড ম্যকিনলে যৌথ ভাবে বৃহস্পতিবার বিলটি এনেছেন। ‘ইউএস কল সেন্টার অ্যান্ড কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ নামে এই বিলে বলা হয়েছে— যে সব মার্কিন সংস্থা নিজেদের সব কাজ বা অধিকাংশ কাজ অন্যান্য দেশে অবস্থিত কল সেন্টার বা অফিস থেকে করিয়ে নেয়, সেই সব সংস্থাকে চিহ্নিত করা হবে। ‘ব্যাড অ্যাক্টরস’ তালিকায় সেই সব সংস্থার নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এই তালিকায় যে সব সংস্থার নাম থাকবে, তারা মার্কিন সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা, আর্থিক সাহায্য এবং ঋণ পাবে না।
মার্কিন কংগ্রেসে বিলটি পাশ হয়ে গেলে ঝাঁপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে অনেক কল সেন্টারের —ফাইল চিত্র।
আউটসোর্সিং নির্ভর মার্কিন সংস্থাগুলির উপর আরও বেশ কিছু শর্ত চাপানো হচ্ছে এই বিলে। যে সব সংস্থা বিদেশি কল সেন্টারের মাধ্যমে মার্কিন গ্রাহককে পরিষেবা দিচ্ছে, সেই সব সংস্থাকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে, কোথায় কল সেন্টারটি অবস্থিত। গ্রাহক যদি সেই কল সেন্টারের সঙ্গে কথা বলতে না চান এবং আমেরিকায় থাকা কোনও প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেন, তা হলে সেই ব্যবস্থাই করতে হবে।
২০১৩ সালেও এই রকমই একটি বিল পেশ হয়েছিল মার্কিন কংগ্রেসে। তাতেও বলা হয়েছিল, পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা মার্কিন গ্রাহককে জানাতে বাধ্য যে কোন দেশে অবস্থিত কল সেন্টারের সঙ্গে গ্রাহক কথা বলছেন। তিনি যদি আমেরিকা-স্থিত কোনও প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেন, তা সংস্থাকে সে অনুরোধ মানতে হবে। বিলটি তখন পাশ হয়নি। কিন্তু মার্কিন কংগ্রেসে বিলটি পেশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অন্য অনেকগুলি দেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। বৃহস্পতিবার ফের সেই রকমই একটি বিল পেশ হল আমেরিকার আইনসভায় এবং ডেমোক্র্যাট ও রিপাবিকানরা যৌথ ভাবে এই বিল আনলেন।
ডেমোক্র্যাট জিন গ্রিন বলেছেন, ‘‘মার্কিন কর্মীরা যাতে ভাল কাজের সুযোগ পান এবং বাঁচার মতো বেতন পান, এটা সুনিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা দেখেছি, কল সেন্টারের কাজগুলো ভারতে, ফিলিপিন্সে এবং অন্যান্য দেশে চলে গিয়েছে।’’
রিপাবলিকান ডেভিড ম্যাকিনলে বলছেন, ‘‘আমেরিকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তার সুরক্ষাই মার্কিন কংগ্রেসের কাছে অগ্রাধিকার।’’ ম্যাকিনলের কথায়, ‘‘এই বিল বলছে না যে সংস্থাগুলিকে তাদের কল সেন্টার আমেরিকাতেই রাখতে হবে। কিন্তু খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলছে যে কল সেন্টারগুলো যদি বিদেশে স্থানান্তরিত করা হয়, তা হলে দেশের সরকারের কাছ থেকে কোনও আর্থিক সহায়তা মিলবে না।’’