আগামীকাল ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস। জীবন ধারণের অতি জরুরী উপকরণ পানি বিশ্বের সর্বত্রই একটি স্পর্শকাতর বিষয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে কৃষি, শিল্প, খাদ্য, শক্তি সম্পদ সেক্টরসহ সামগ্রিক জনস্বাস্থ্য এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পানির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে পানির উৎসস্থলের প্রতি যত্নবান হওয়া ও নিরাপদ পানির সংস্থানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী পানির অপরিহার্যতা বিবেচনা করে এবছর পানি দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ণয় করা হয়েছে, “পানি ও টেকসই উন্নয়ন”। অর্থাৎ টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রয়োজন পানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা।
সারা বিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দিনটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ১০টায় বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ কাউন্সিল (বার্ক) ভবনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আবদুর রব মিয়া।
বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন) ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পানি দিবস উপলক্ষে এক মানববন্ধনের আয়োজন করেছে। মানববন্ধনটি আগামীকাল সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের মূল ফটকের সামনে অনুষ্ঠিত হবে।
পানি দিবস উপলক্ষে আজ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, পলিসি সাপোর্ট ইউনিট, জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্র, ইউনিসেফ, বিশ্ব ব্যাংক, অক্সফাম, বাংলাদেশ ওয়াশ এ্যালায়েন্স ও এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেল্থ যৌথভাবে ‘মিট দ্যা প্রেস’ আয়োজন করে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ‘পানি সম্পদ সংরক্ষণ ও পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।
১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের (ইউএনসিইডি) এজেন্ডা ২১-এ প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব উত্থাপিত হয়।
১৯৯৩ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভা ২২ মার্চকে বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয়। তার পর থেকে এই দিবস পালনের গুরুত্ব বাড়ছে।
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি এই দিনটিকে নিজ নিজ রাষ্ট্রসীমার মধ্যে জাতিসংঘের পানিসম্পদ সংক্রান্ত সুপারিশ ও উন্নয়ন প্রস্তাবনাগুলোর প্রতি মনোনিবেশের দিন হিসেবে উৎসর্গ করেছে। প্রতি বছর বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা বিশেষ কর্মসূচি পালন করে থাকে। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতিসংঘ- বিশ্ব পানি দিবসের প্রতিপাদ্য, বার্তা ও প্রধান সংস্থা নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছে।
সদস্য দেশগুলোর বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও পরিচ্ছন্ন পানি ও পানিসম্পদ রক্ষা সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য এইদিনে বিশেষ কর্মসূচি আয়োজন করে।