বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্ক ভাল যাচ্ছে না। নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অব কন্ট্রোল) ঘিরে অশান্তি, পাকিস্তানে ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবের ফাঁসি নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে দুই দেশ। তারপরও মুখোমুখি হতে পারেন ভারত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।
আগামী মাসে কাজাখস্তানে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। বছরদেড়েক আগে ঠিক এভাবেই প্যারিসে জলবায়ু চুক্তিসংক্রান্ত সম্মেলনের ফাঁকে আচমকাই সংক্ষিপ্ত আলোচনা সেরে নিয়েছিলেন দুই প্রধানমন্ত্রী। খবর বিজনেস ইনসাইডারের।
জুনে কাজাখস্তানের রাজধানী আস্তানায় একটি বৈঠকের ফাঁকে দু’নেতার মধ্যে সাক্ষাৎ হতে পারে বলে জানান নওয়াজ শরিফের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ। তিনি বলেছেন, ‘ভারতের পক্ষ থেকে আগ্রহ দেখানো হলে পাকিস্তানও বৈঠকের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে।’ পাকিস্তানের এমন মন্তব্যে দু’দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আলোচনায় বসার জন্য চাপ বাড়ছে মোদি সরকারের ওপর।
দু’দেশের মধ্যে আলোচনার পক্ষে মার্কিন প্রশাসনও। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন চায় না দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হোক। সেক্ষেত্রে উপমহাদেশে ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। কারণ মার্কিন প্রশাসনের ধারণা, ভারতের ওপরে ফের যে কোনো সময়ে বড়সড় হামলা চালাতে পারে পাক জঙ্গিরা। ফলে চলতি বছরে দু’দেশের মধ্যে তিক্ততা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ড্যানিয়েল কোটস।
দুই সরকার প্রধানের মধ্যে আলোচনায় বসার প্রশ্নে ক্ষীণ সম্ভাবনা যখন তৈরি হচ্ছে, তখন কুলভূষণ কাণ্ডে কোনোভাবেই ছাড় দিতে রাজি নয় ইসলামাবাদ। সম্প্রতি চরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার কুলভূষণের ফাঁসির আদেশে আন্তর্জাতিক আদালত স্থগিতাদেশ দেয়ায় কিছুটা ব্যাকফুটে পাক প্রশাসন।
পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল আসতার আউসফ আলি বৈঠক করেন। তারপর নিজেদের সুপারিশ তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। সূত্রের খবর, সুপারিশে আন্তর্জাতিক আদালতের পরামর্শ না মানার পক্ষেই মত দেন অ্যাটর্নি জেনারেল। পাক সূত্রের দাবি, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এ ক্ষেত্রে আপস করা উচিত নয়।
উল্লেখ্য ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের একটি নৌ-বিমানকে গুলি করে নামিয়েছিল ভারত। ইসালামাবাদ বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানায় আন্তর্জাতিক আদালতে। তখন ভারত নিরাপত্তার যুক্তি দেখালে তা মেনে নেয় আন্তর্জাতিক আদালত। এখন জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতের দেখানো সেই পথেই এগোতে চাইছে ইসলামাবাদ।