মে মাসে আচমকা খবরটা পেয়ে চমকে উঠেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। হঠাত্ করেই অবসর ঘোষণা করে বসেছিলেন এবি ডিভিলিয়ার্স। ক্রিকেট বিশ্বে তাঁর পরিচয় এন্টারটেইনার হিসাবে। তাঁর ব্যাটিং-ধামাকা প্রায়শই জনজীবন স্তব্ধ করে দিয়েছে। হাজারো কাজ ফেলে শুধুমাত্র তাঁর ব্যাটিং দেখবেন বলে ক্রিকেভক্তরা টিভির সামনে বসেছেন নিয়ম করে। সেই এবির অবসর ঘোষণা অবশ্যই কষ্ট দিয়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের।
হঠাত্ করে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবি? গত তিন মাসে কখনও একবারের জন্যও এবি ডিভিলিয়ার্স তাঁর এই সিদ্ধান্তের পিছনে থাকা আসল কারণটা জানাননি। কিন্তু এবার বলে ফেললেন। এবি ডিভিলিয়ার্স বলছেন, ”আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেললে অনেক সময়ই প্রচণ্ড চাপ মাথায় চড়ে বসে। সেই প্রচণ্ড চাপ সামলে ক্রিকেট খেলাটা অনেক সময় টেনশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা নিজেরাই নিজের উপর অনেক সময় চাপ তৈরি করি। তার উপর সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ, কোচের পারফর্ম করার চাপ। তার উপর গোটা দেশের প্রত্যাশা তো রয়েইছে। এত চাপ মাথায়া নিয়ে খেলতে নেমে পারফর্ম করাটা কখনওই সহজ কাজ নয়।”
দেশের হয়ে খেলার চাপ না হয় মাথা থেকে নামিয়ে ফেললেন। কিন্তু তিনি তো আইপিএলে খেলবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন। অর্থাত্, সমর্থকদের প্রতাশ্যার চাপ তাঁকে এখনও সামলে যেতে হবে। এবি এক্ষেত্রে বলছেন, ”কোনও বড় ম্যাচে সেঞ্চুরি করার আনন্দটা বলে বোঝানো যাবে না। গোটা গ্যালারি তখন আমার নাম ধরে চেঁচাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সি গায়ে এমন ছবি আর আমার জীবনে আসবে না। এটা ভেবে খারাপ লাগছে। আবার এটা ভেবে ভাল লাগছে যে, আমি কোনও গ্লানি নিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি না। তা ছাড়া দেশের হয়ে খেলার সময় আমরা মাসের পর মাস বাড়ির বাইরে কাটাতাম। কোনও ক্রিকেটার যদি বলে থাকে যে এই জন্য তাঁর জীবনে কোনও চাপ তৈরি হয় না তা হলে সে মিথ্যে কথা বলছে। মাসের পর মাস বাড়ির বাইরে থাকাটা সত্যি চাপের।”
২০০৪-এ দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল এবির। দেশের হয়ে ২২৮ একদিনের ম্যাচ খেলে ৯৫৭৭ রান করেছেন তিনি। রয়েছে ২৫টা সেঞ্চুরি। জাতীয় দলের হয়ে এতগুলো দিন খেলার পরও এবি বলছেন, ”আমি একটু মুখচোরা মানুষ। খুব বেশি ভিড় আমার ভাল লাগে না। আমি কখনও স্পটলাইটে থাকতে চাই না। নিজেক গুটিয়ে রাখতে ভালবাসি। তা ছাড়া খেলার বাইরে আমি পরিবারের জন্যও কিছুটা সময় বাঁচিয়ে রাখতে চাই। আমার মনে হয় এটা কোনও অপরাধ নয়। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে আমার ভাল লাগে।”