ম্যাচ বাঁচাতে প্রাণপণে লড়ছে অস্ট্রেলিয়া। তাদের পেসারদের ভয়ংকর একেকটা শর্ট বল ধেয়ে আসছে ইংল্যান্ডের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান জ্যাক লিচের দিকে। কোনোমতে পড়িমরি করে বল ঠেকিয়ে নিজের শরীর আর ইংল্যান্ডের আশা দুই-ই বাঁচিয়ে রাখছিলেন এই বোলার। সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন বেন স্টোকসকে। ১ উইকেটের এই টেস্ট জয়ে স্টোকসের অবদান সবচেয়ে বেশি হলেও লিচকে কোনোভাবেই খাটো করা যাবে না। তাকে উইকেটে টিকে থাকতেই হতো। লিচকে তাই বাকি জীবনের জন্য ফ্রি চশমা সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে ইংল্যান্ডের চশমা কোম্পানি স্পেকসেভারস।
শেষ উইকেটে লিচ ওভাবে স্টোকসকে সঙ্গ না দিলে ইংল্যান্ড তো বহু আগেই হেরে যেত। ১৭ বলে করেছেন ১ রান। কিন্তু তার উইকেটে টিকে থাকা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা বলে বোঝানো যাবে না। ওই ১ রান একটি সেঞ্চুরির চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান। প্রায় প্রতিটি বল মোকাবিলা করার আগে একবার করে চশমাটা মুছে নিচ্ছিলেন তিনি। যাতে প্যাট কামিন্সের নব্বই মাইল বেগে ধেয়ে আসা বলগুলো তাকে ফাঁকি দিতে না পারে! এই দৃশ্য চোখ এড়ায়নি ইংল্যান্ডের চশমা কোম্পানি স্পেকসেভারসের। বাকি জীবন লিচকে ফ্রি চশমা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা!
ম্যাচ শেষে নায়ক স্টোকস তার সতীর্থের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘লিচ যখন এল উইকেটে, তখন জানতাম কী করতে হবে। শুধু বলেছিলাম পাঁচ আর এক। লিচ এর আগেও করেছে এটা, নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নেমে ৯২ রান আছে ওর। তাই আমি ওকে সাহস দিয়েছি। শেষ দিকে তো আমি তাকাতেই পারছিলাম না। ম্যাচটা যখন জিতলাম, ও এসে আমাকে চুমু দিল। আমার জীবনের সেরা চুমু এটি! যদি রান তুলতে সারা দিনও লাগত, আমি তা করতে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু লিচ নামার পর বুঝলাম, আমাদের দ্রুত শেষ করতে হবে। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলগুলো লিচ খেলেছে। সেভাবে এটা করল, যেটা অসাধারণ।’
এরপর বেন স্টোকস একটা টুইটে স্পেকসেভারসকে মেনশান করে লিখেছেন, ‘স্পেকসেভারস, অন্তত এই কাজটা করুন। বাকি জীবনের জন্য জ্যাক লিচকে ফ্রি চশমা দেওয়ার ব্যবস্থা করুন!’ টুইটটার জবাব দিতে দেরি করেনি স্পেকসেভারস। তারাও লিখেছে, ‘আমরা নিশ্চিত করছি, বাকি জীবনের জন্য জ্যাক লিচকে ফ্রি চশমা বিলিয়ে যাব আমরা!’ আবার মজা করে বিবিসি স্পোর্টসের সাংবাদিক ড্যান ওয়াকার লিখেছেন, ‘কেউ লিচের চশমাটা ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রাখার ব্যবস্থা কর!’