ডিএমপি নিউজঃ আজ ১লা মার্চ, ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’। জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে দেশব্যাপী সকল পুলিশ ইউনিটে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’। এই দিবসে গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানানো হলো কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মত্যাগকারী পুলিশ সদস্যদেরকে। ২০১৮ সালে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ১৫৮ জন পুলিশ নিহত হন। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ২৩ জন সদস্য ২০১৮ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
আজকের এই দিনে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে সেই সকল শহীদ পুলিশ সদস্যদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণসহ মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্বীকৃতি স্মারক প্রদান করা হয়।
কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানী ঢাকার মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ (পিএসসি) এ দিবসটি পালন করা হয়। আজ (১ মার্চ) শুক্রবার সকালে পুলিশ স্টাফ কলেজ চত্বরে নির্মিত অস্থায়ী পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি দিবসের সূচনা করেন। পরে একে একে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এবং নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় পুলিশের একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম প্রদান করে। সেই সাথে বাজানো হয় বিউগলে করুণ সুর।
অনুষ্ঠানে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৮ সালে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের গ্রেফতারসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান ও জনগণের জানমাল রক্ষাকালে কর্তব্যরত আবস্থায় নিহত ১৫৮ জন পুলিশ সদস্যের পরিবারবর্গকে স্বীকৃতি স্মারক ও উপহার তুলে দেন। নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অনুষ্ঠানের সভাপতি আইজিপিকে তাদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় এক করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয়।
পরে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘শৃঙ্খলা-নিরাপত্তা প্রগতি’ মন্ত্রে দীক্ষিত বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিহত ও আহত হন।
তিনি আরো বলেন, ‘দেশের জন্মলগ্ন হতে স্বাধীনতার চেতনা যে বাহিনীর হৃদয়ে প্রোথিত, সে পুলিশ বাহিনী গণতন্ত্রেও অগ্রযাত্রায় সহযাত্রী হবে। ভূমিকা রাখবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নির্মাণে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করে তাদের প্রতি সম্মান জানান।
‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের স্মরণে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’ প্রতি বছর ১লা মার্চ পালন করা হচ্ছে।