নব্বই দশকের মাঝামাঝি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোযোগ দেন। হুমায়ূন আহমেদের লেখা উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে নন্দিত নরকে, লীলাবতী, কবি, শঙ্খনীল কারাগার, গৌরিপুর জংশন, বহুব্রীহি, এইসব দিনরাত্রি, দারুচীনি দ্বীপ, নক্ষত্রের রাত, কোথাও কেউ নেই, আগুনের পরশমনি, শ্রাবণ মেঘের দিন, জোছনা ও জননীর গল্প প্রভৃতি।
তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে আগুনের পরশমনি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবন মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা ও নয় নম্বর বিপদ সংকেত। তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ও জয় করেছে দর্শক ও সমালোচকদের মন।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ূন কাদিও স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন। দেশের বাইরেও তাকে নিয়ে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। তার প্রমাণ জাপান টেলিভিশন ‘এনএইচকে’ তাকে নিয়ে নির্মাণ করেছে পনের মিনিটের তথ্যচিত্র ‘হু ইজ হু ইন এশিয়া’।
নুহাশপল্লীর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, হুমায়ূন আহমেদের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নুহাশপল্লীর পক্ষ থেকে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। আজ সকালে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ছেলে নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে নূহাশপল্লীতে কবর জিয়ারত করবেন।
‘এদিকে, পাবলিক লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে আজ বিকালে শুরু হবে সপ্তাহব্যাপী হুমায়ূন আহমেদ বইমেলা। জাতীয় জাদুঘর আয়োজন করেছে হুমায়ূনকে নিয়ে সেমিনারের। এছাড়া, চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সপ্তমবারের মতো হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে ‘হুমায়ূন মেলা’। সকাল ১১টায় হিমুপ্রেমিরা হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে উপস্থিত থেকে হলুদ বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করবেন। উপস্থিত থাকবেন হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন অঙ্গনে তার ভক্ত ও বিশিষ্টজনরা। তার স্মরণে স্মৃতিকথা বলবেন অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনরা। মেলার স্টলগুলোতে থাকবে হুমায়ূন আহমেদের বই, তার নির্মিত চলচ্চিত্র ও নাটকের ভিডিও সিডি। মেলা সরাসরি সমপ্রচার করবে চ্যানেল আই ও রেডিও ভুমি।
হুমায়ূন আহমেদের শরীরে ২০১১ সালের সেপ্টেস্বর মাসে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিত্সার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। সেখানে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে এগারোটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।