সাধারণত প্রাণী বা পতঙ্গ যাই হোক, বেশীরভাগ জীবেরই দুটি করেই চোখ থাকে। আর এটাই ছোটো থেকেই আমরা সকলেই জেনে আসছি। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম হল মাকড়শা। ক্ষুদ্রাকৃতির হোক বা দীর্ঘাকার মাকড়সা নামক এই প্রাণীর চোখের সংখ্যা মোট কয়টি তা হলফ করে বলা সম্ভব নয়। তবে অস্ট্রেলিয়ার একজন মহিলা অতি সম্প্রতি একটি নতুন প্রজাতির মাকড়সার সন্ধান পেয়েছেন। এই ক্ষুদ্র প্রাণীর চোখের সংখ্যা আটটি। এর সব কটিই চোখের রঙ আবার গাঢ় নীল রঙের।
জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দা তথা প্রকৃতিপ্রেমী আমান্ডা ডি জর্জ নামের ওই মহিলা বিগত ১৮ মাস আগে নিজের বাড়ির উঠোনে পায়চারী করার সময় তিনিই প্রথম এই নতুন প্রজাতির মাকড়সাটি দেখতে পান। সময় নষ্ট না করে গাঢ় নীল রঙের আট চোখ বিশিষ্ট মাকড়সাটির ছবি সঙ্গে সঙ্গে তিনি ক্যামেরা বন্দি করেন।
এরপর তিনি ওই মাকড়সাটির বেশ কিছু ছবি “ব্যাকইয়ার্ড জুলজি” নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন। আর তাঁর এই পোস্ট করা ছবি ব্যাপক ভাবে সাড়া ফেলে প্রকৃতিপ্রেমীদের মধ্যে। যদিও তখন তিনি ভাবতেই পারেননি, এটি নতুন প্রজাতির কোনও মাকড়সা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ডি জর্জের ওই ফেসবুক পোস্টে নজর পড়ে মাকড়সা বিশেষজ্ঞ জোসেফ শুবার্টের। প্রথম যখন তিনি ছবিতে মাকড়সাটিকে দেখেছিলেন তখন সেটিকে ধরে রাখার জন্য জর্জকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন শুবার্ট।
এরপর গত কয়েক মাস ধরে ওই মাকড়সাটিকে খুঁজতে থাকেন ডি জর্জ। কয়েক মাস খোঁজাখুঁজির পর দুই সপ্তাহ আগে আবারও দেখা মেলে অদ্ভুতকায় এই পতঙ্গটির। তখন ডি জর্জ একটি খালি পাত্রে মাকড়সাটিকে ধরে রাখেন। এছাড়াও সেখানে তিনি আরও একটি মাকড়সা খুঁজে পান। জাম্পিং স্পাইডার (লাফানো মাকড়সা) গোত্রের মাকড়সা এগুলো। এগুলো একে অন্যকে খেয়ে ফেলে। সেই কথা মাথায় রেখে পরে দুটি মাকড়সাকে আলাদা পাত্রে রেখে দেন তিনি।
যদিও এরপর দুটি মাকড়সাকেই বিশেষজ্ঞ মেলবোর্নে শুবার্টের কাছে পাঠানো হয়েছে। শুবার্ট লাফানো মাকড়সার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। আপাতত করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার জাদুঘর মিউজিয়ামস ভিক্টোরিয়ার গবেষণাগার। জানা গিয়েছে, পরে আবার যখন সেটি চালু হবে তখন আনুষ্ঠানিকভাবে নামকরণ করা হবে এই মাকড়সার।