পাহাড়ে বৈসাবিকে ঘিরে জমে উঠেছে উৎসবের মেলা। চারদিকে এখন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আনন্দ-উল্লাসের জোয়ার। ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের তরুণ তরুণীরা সেজেছে নিজেদের ঐতিহ্যরূপে। তাদের পোশাকের বৈচিত্র্যতায় ফুঠে উঠেছে নিজস্ব সম্প্রদায়ের পরিচয়।মেতেছে নানা আচার অনুষ্ঠানে । শুক্রবার ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। সেদিনও ছিল জমজমাট। বিভিন্ন বয়সের পাহাড়ি-বাঙালী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণীদের পাদভারে কানায় কানায় ভরে যায় মেলা প্রাঙ্গন। মেলা যেন পরিণত হয়েছে পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীর সম্প্রীতির মিলন ক্ষেত্র। মেলায় চলছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শিল্পীদের গান, জীবনযাত্রার উপর আলোক চিত্র, পাচন রান্না, নাটক, খেলাধুলা, গেঙ্গুলি গানের আসর ও নাচ। রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে এবার বসেছে ৩০টি স্টল। প্রতিটি স্টল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মাচাঙ ঘরের আদলে বাঁশ আর কাঠ দিয়ে তৈরি করা। আর এসব স্টলে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, চাক, পাংখোয়া, লুসাই, খুমী ও খিয়াং নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি-সংষ্কৃতি, অলংকার, কোমর তাঁতের তৈরি পোশাক ও বাঁশ আর বেতের তৈরি পণ্য, খাবার, নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বিভিন্ন পণ্য সমগ্রি স্থান পেয়েছে।
এ মেলা শেষ হবে শনিবার। তবে বৈসাবি মেলা শেষ হলেও শেষ হচ্ছেনা উৎসব। এ উৎসব চলবে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। থাকছে আনন্দ শোভাযাত্রা, পাহাড়ি খেলাধূলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানো, বিজু, জলখেলি ও বাংলা বর্ষবরণ উৎসব।
অর্ধ মাসব্যাপী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নানা কর্মসূচী মধ্যে জমজমাট থাকবে রাঙামাটি। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত ১০ ভাষা ভাষি ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবিকে বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু নামে পালন করে থাকে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রনে বৈসাবি এক বৈচিত্রময় রূপ ধারন করেছে। এটা মুলত পুরান বছরকে বিদায় দেওয়া আর নতুন বছরকে বরণ করার জন্য পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের এ বৈসাবি উৎসব। এ উৎসবে সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতির মিলন হয়। থাকেনা কোন হিংসা বিদ্বেষ।