২০১০ সালে পুরুষদের মধ্যে সর্বোচ্চ ধুমপায়ী ছিলো পুরুষ ৪০-৫৪ বৎসর এবং মহিলা ৭০ বৎসর ও তার উর্ধ্বে।
WHO সদস্যভুক্ত দেশ সমূহের একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত সব ধরনের তামাক ব্যবহার ২০২৫ সালের মধ্যে শতকরা ৩০% হারে নামিয়ে আনা। এই তথ্য শুধুমাত্র ধূমপায়ীদের উপর গবেষণা থেকে নেয়া। যদি বাংলাদেশ নন কমুনিকেশন ডিজিজ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করে যায় তবে বাংলাদেশ এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে।
২০১০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে পুরুষ ধূমপায়ী শতকরা ৪৬% এবং মহিলা ধূমপায়ী শতকরা ১%। বাংলাদেশে এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালে তা হবে পুরুষ ধূমপায়ী শতকরা ৩০% এবং মহিলা ধূমপায়ী ০% এ গিয়ে দাঁড়াবে।
অতএব, বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করা হলে একদিকে যেমন প্রতিবছর প্রায় ৭৬ হাজার থেকে ১লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করা যাবে এবং কর বৃদ্ধির ফলে ১ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে এই অর্থ দিয়ে দিয়ে তামাকের কারনে যে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয় তা চিকিৎসা ব্যবস্থা দেয়া যাবে এবং রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভুমিকা নেওয়া যাবে। অতএব, সিগারেট ও জর্দ্দা, সাদাপাতার উপর অধিকহারে কর বৃদ্দি করতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাক জনিত রোগে প্রায় এক লক্ষ মানুষ মারা যায় এবং সিগারেট ক্রয়ে দেশের জিডিপির এক শতাংশ ব্যয় করা হয়। প্রতিবছর বাংলাদেশে তামাক সেবনের ফলে জনগণ যে সমস্ত রোগে আক্রান্ত হয় তার ফলে ১০০ ভাগ রোগীর চিকিৎসা বাবদ (সরকারের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় এবং রোগীর নিজস্ব ব্যয়) বছরে প্রায় ৯,৯০০৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়। অন্যদিকে তামাক খাতে সরকার বছরে প্রায় ২,৫০০ কোটি টাকা যা দেশের অর্থনীতিতে বরাট ক্ষতি। অতএব, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে আমাদের এখন গণজাগরণ তৈরি করতে হবে নতুবা শুধু মৃত্যুর দিকেই এগিয়ে যেতে হবে। সেই সাথে তামাক চাষের আগ্রাসন যেমন বন্ধ করতে হবে তেমনি ধূমপানকে নিরুৎসাহিত করে মাদকাসক্তি ও তামাক/ধূমপানের অভিশাপ থেকে দেশের যুবসমাজকে সচেতন করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে কঠোরভাবে বাস্তবায়িত করতে হবে। সেই সাথে ধূমপান/তামাক ছাড়ার জন্য ধূমপায়ীদের জন্য হেলপ লাইন (Help Line) চালু করতে হবে। সর্বোপরি তামাক যেহেতু উন্নয়নের অন্তরায় সেহেতু তামাক ও ধূমপানের ব্যবহার সকল ক্ষেত্রে বন্ধ করতে হবে। আমরা চাই তামাক ও মাদকযুক্ত বাংলাদেশ।
(সংক্ষেপিত)
অধ্যাপক ড. অরুপরতন চৌধুরী
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মানস (মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা)