এবার আর অ্যানিমেশনে নায়, বাস্তবেও জন্ম নেবে ম্যামথ। অন্তত এমনটাই দাবি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের। সম্প্রতি বোস্টনে আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স (এএএএস) এর আলোচনায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ম্যামথ ও হাতির হাইব্রিড এই প্রাণীর জন্ম দিতে জিন এডিটিং টেকনোলজির দ্বারস্থ হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষজ্ঞ দলের দাবি, বিলুপ্ত প্রাগৈতিহাসিক এই প্রাণীকে ফিরিয়ে আনার কাজও প্রায় শেষ। এই মুহূর্তে গবেষণাগারে হাইব্রি়ড ভ্রূণ তৈরির কাজও চলছে। বিজ্ঞানীদের আশা, আগামী ২ বছরের মধ্যেই ফের জন্ম নেবে তুষার যুগে হারিয়ে যাওয়া এই প্রাণী।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে ইউরোপ, এশিয়া, উত্তর আমেরিকার বিস্তির্ণ অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত ম্যামথরা। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যায় এই প্রজাতি। সাইবেরিয়ায় বরফের মধ্যে থেকে পাওয়া গিয়েছিল ম্যামথের ‘ফ্রোজেন’ ডিএনএ-র নমুনা। নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া সেই প্রাণীর জন্ম দিতে সেই ডিএনএ-র নমুনাই ব্যবহার করা হচ্ছে। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে জিন এডিটিং প্রক্রিয়ারও।
পৃথিবীর অন্যতম সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ম্যামথের জিনের মধ্যে ক্লাস্টার্ড রেগুলারলি ইন্টারস্পেসড শর্ট প্যালিন্ড্রমিক রিপিটস (ক্রিসপার/ক্যাস৯) নামক জিনটিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তিত এই জিন নতুন কোষ তৈরি করতে পারবে। এই নতুন কোষ ম্যামথের মতো লোমশ ও চর্বিযুক্ত ত্বক, প্রবল ঠান্ডা সহ্য করার ক্ষমতাযুক্ত রক্ত, শরীরের তুলনায় ছোট কান এবং অন্যান্য শারীরিক বৈশিষ্ট্য তৈরি করতে পারবে।
প্রকৃতিকে বাঁচাতেই এমন যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন তাঁরা। গবেষক দলের দাবি, তুন্দ্রা অঞ্চলের পরিবেশকে রক্ষা করবে এই প্রাণী। গ্রিন হাউজ গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাবও কমাবে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, সাইবেরিয়া অঞ্চলের তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত কমাতে পারবে পৃথিবীর নতুন এই সদস্য। সূত্রঃ ইত্তেফাক