ভারতের আসামে প্রকাশিত নাগরিকদের প্রথম খসড়া তালিকায় নাম বাদ পড়েছে প্রায় এক কোটি ৩৯ লাখ বাসিন্দার। স্থান পেয়েছেন এক কোটি ৯০ লাখ। আবেদন করেছিল তিন কোটি ২৯ লাখ।
ভারতের আসামে নাগরিকদের প্রথম এই খসড়া তালিকা প্রকাশের পর রাজ্যজুড়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার মধ্যরাতে তালিকার প্রথম কিস্তি প্রকাশ করা হয়। এমনিতেই প্রায় অর্ধেক বাসিন্দার নাম বাদ পড়ায় চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তার পর আবার রাজ্যটির অনেক নেতা, এমপি ও বিধায়ক বাদ পড়েছেন। এছাড়া বিরোধী দল কংগ্রেসের কয়েকজন এমপি ও সাবেক মন্ত্রীর নামও স্থান পায়নি তালিকায়।
টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি জানায়, রাজ্যের রাজধানী গোহাটি ও অন্যান্য কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইডিইউএফ) অন্তত পাঁচজন নেতার নাম তালিকায় স্থান পায়নি। এদের মধ্যে রয়েছেন এমপি ও এমএলএ। একইভাবে বিধানসভার তিন কংগ্রেস এমএলএ’র নামও নেই তালিকায়। এছাড়া সাবেক দুই মন্ত্রীও তালিকায় স্থান পাননি।
এনআরসি কেন্দ্র বারপেটাতে অনেকেই বিক্ষোভ করেছেন তালিকায় নিজেদের নাম না পেয়ে। এ সময় তারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন। তালিকায় নিজের নাম না দেখে শিলচরে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
দৃশ্যত নির্বিচারে তালিকা থেকে পড়ায় এনআরসি কর্মকর্তা প্রতীক হাজেলার মতো অনেকেরই পরিবারের লোকজন বাদ পড়েছেন। দিল্লিতে প্রখ্যাত নাগরিক শিলাদিত্য দেব তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। জানিয়েছেন, তালিকায় তার পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন; কিন্তু তাকে রাখা হয়নি, যা ব্যাখ্যাতীত ও পীড়াদায়ক।
চলমান উত্তেজনার মধ্যে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (এএএসইউ) নেতা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্যের পরিবারের কয়েকজন সদস্যের নাম বাদ পড়েছে। তিনিই এনআরসির প্রথম খসড়া প্রকাশকে অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে আসামের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত আখ্যা দিয়ে তালিকাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল সাইলেশ তালিকার খসড়া প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘যাদের এখন পর্যন্ত যাচাই করা হয়েছে তাদের নিয়ে এ খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বাকিদের নাম বিভিন্নভাবে যাচাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষ হলেই আমরা আরেকটি খসড়া প্রকাশ করব।’