আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন শীতলপাটি। আর সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটিকে বিশ্বের নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ২০১৭ (দ্য ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউমানিটি) হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
আজ দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে ইউনেস্কোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ (আইসিএইচ) কমিটির ১২তম অধিবেশনে এ স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ২০১৬ সালে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটিকে ইউনেস্কোর ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল কমিটি ফর দ্য সেফগার্ডিং অব দ্য ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’এর ১২তম অধিবেশনে বিশ্বের নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য প্রস্তাবনা উত্থাপন করে।
সিলেটের শীতল পাটির জন্য স্বীকৃতি আদায়ের এ প্রক্রিয়া শুরু ২০১৩ সাল থেকে। ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর ইউনেস্কোর ‘আইসিএইচ’এ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উপাদান অন্তর্ভুক্তি শীর্ষক কমিটির (পিএমসি) নবম সভায় শীতল পাটিকে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ৪ জানুয়ারি শীতল পাটি বুনন শিল্পকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্তিকরণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। একই বছরের ৭ জানুয়ারি জাতীয় জাদুঘর থেকে শীতল পাটির ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরির লক্ষ্যে ‘জাতিতত্ত্ব বিভাগ’ একটি সভা করে। পরে ওই বছরেরই ১৬ জানুয়ারি ‘আইসিএইচ’এ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উপাদান অন্তর্ভুক্তি শীর্ষক কর্মসূচি মনিটরিং কমিটির (পিএমসি) ১০ সভায় জাতীয় জাদুঘর থেকে শীতল পাটিকে অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রস্তাব করা হয় এবং এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২৯ জানুয়ারি সিলেটের শীতল পাটির প্রামাণ্যচিত্র তৈরির জন্য ইউনেস্কোর চেক পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, এ শীতল পাটি হলো মেঝেতে পাতা এক ধরনের আসন। এটি বাংলাদেশের একটি এতিহ্যবাহী কুটির শিল্প। মুর্তা বা পাটি, বেত বা মোস্তাক (বৈজ্ঞানিক নাম: ঝপযঁসধহহরধহঃযঁং ফরপযড়ঃড়সঁং) নামক গুল্মজাতীয় উদ্ভিদের ছাল থেকে এ পাটি তৈরি হয়ে থাকে। হস্তশিল্প হিসেবেও এ পাটির যথেষ্ট কদর রয়েছে। শহরে শো-পিস এং গ্রামে এটি মাদুর বা চাদরের পরিবর্তে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। সাজসজ্জা দ্বারা সজ্জিত মাদুরকে আবার নকশি পাটিও বলা হয়।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জামদানি, বাউলগান, মঙ্গল শোভাযাত্রাও ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। বাসস