এখনও আতঙ্কের রেশ কাটেনি ৷ নতুন করে মাটি দুলে উঠল ইন্দোনেশিয়ায় ৷ মঙ্গলবার সকালে ফের জোড়া ভূমিকম্পের মুখে পড়ল গোটা দেশ ৷ রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৯ ও ৬.০ ৷ ফিরে এল দুদিন আগেই ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সুনামির স্মৃতি ৷
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকা সুম্বা দ্বীপে প্রথম কম্পন অনুভূত হয় ৷ সুম্বা থেকে ৪০ কিমি দূরে ও ১০ কিমি মাটির নীচে এই কম্পনের উৎসস্থল৷ সুম্বা দ্বীপে প্রায় ৭ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের বাস৷ আতঙ্কে ঘর বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মানুষ ৷
ভূমিকম্প ও সুনামিতে তছনছ হয়ে যাওয়া সুলায়েসি দ্বীপ থেকে ১৬০০ কিমি দূরে এই সুম্বা দ্বীপ৷ এরপরেই মাটি থেকে ৩০ কিমি গভীরে দ্বিতীয় কম্পনটি অনুভূত হয়৷ তবে বড়সড় কোনও ক্ষতির খবর মেলেনি ৷ দুটি কম্পনের ব্যবধান ছিল মাত্র কয়েক সেকেন্ড ৷ স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান আতঙ্কে সবাই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে৷ হোটেল থেকে পর্যটক কোনও রকমে বেরিয়ে আসেন৷ এই ভূমিকম্পের কোনও আগাম সতর্কতা ছিল না বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ তবে আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছে প্রশাসন৷ সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়নি৷
এদিকে শুক্রবার কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়া৷ ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপে গোটা দেশ৷ ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়৷ মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানায় কম্পনের উৎসস্থল ছিল মাটি থেকে ১৮ কিমি ভিতরে ও ডোংগালা শহর থেকে ৩০.৫ কিমি উত্তরে ৷
এদিনই ইন্দোনেশিয়ার বুকে আছড়ে পড়ে সুনামি ৷ সঙ্গে জোরালো ভূমিকম্প৷ রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ধরা পড়ে ৭.৫৷ আর সুনামির জেরে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ১০ ফুট পর্যন্ত। ফলে প্রবল জলোচ্ছ্বাসে কার্যত ভেসে যায় সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল। ডোনগালার তালিসা বিচে শুক্রবার ধেয়ে আসে সেই সুনামি৷ মুহূর্তে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সবকিছু৷ ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ভয়াবহতার বেশ কিছু ছবি, ফুটেজ ৷
ভয়াবহ সুনামির গ্রাসে হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, যত সময় এগোচ্ছে তত লাফিয়ে লাফিয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বলে স্থানীয় উদ্ধারকারী দল। শেষ পাওয়া খবর মোতাবেক প্রায় ৯০০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে এখনও নিখোঁজ বহু মানুষ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে, অগাস্ট মাসের শুরুর দিকে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে ইন্দোনেশিয়া ৷ ২৯ জুলাই ৬ দশমিক ৪ মাত্রার এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল লোম্বক দ্বীপ। তখন ১২ জনেরও বেশি মানুষ মারা যান ৷