ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রানঅফ ভোটাভুটির মাত্র দেড়দিন আগে ‘ব্যাপক’ হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছে এগিয়ে থাকা প্রার্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রচারণা শিবির।
অনলাইনে প্রায় নয় গিগাবাইটের মতো ইমেলই ফাঁসের পর শুক্রবার এ অভিযোগ করে পক্ষটি। তাদের প্রচারণাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই এসব ইমেইল ফাঁস করা হয়েছে বলে দাবি ম্যাক্রোঁর প্রচারণা শিবিরের।
শুক্রবার রাতে বেনামি ডকুমেন্ট শেয়ারিং সাইট পাস্তেবিনে ‘ইমেইললিকস’ নামের এক প্রোফাইলে প্রায় নয় গিগাবাইট তথ্য পোস্ট করা হয়। কারা এসব তথ্য পোস্ট করেছে এবং এগুলোর সবগুলোই আসল কি-না তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
এসব ইমেইল ফাঁসের নিন্দা জানিয়েছেন প্রার্থী ম্যাক্রোঁ।
রোববার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বের রানঅফ ভোট অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের ভোটাভুটিতে প্রতিদ্বন্দ্বি কট্টর ডানপন্থি প্রার্থী মারিন লো পেন থেকে অনেকটা এগিয়ে ছিলেন মধ্যপন্থি প্রার্থী ম্যাক্রোঁ।
রানঅফের আগে সর্বশেষ জরিপগুলোতেও লো পেনের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। এসব জরিপে দেখা গেছে, ৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে লো পেনকে পরাজিত করতে পারেন ম্যাক্রোঁ।
এক বিবৃতিতে তারা হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ম্যাক্রোঁর রাজনৈতিক আন্দোলন ‘এগিয়ে যাও’।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আজ সন্ধ্যায় ‘এগিয়ে যাও!’ আন্দোলন একটি ব্যাপক এবং সমন্বিত হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। এতে বহু অভ্যন্তরীণ তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয় পড়ছে।”
শুক্রবার মধ্যরাতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে ফাঁস করা ইমেলইগুলোর বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য আসতে শুরু করে।
রোববার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় ভোট গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের প্রচারণা নিষিদ্ধ থাকায় বিষয়টি নিয়ে ম্যাক্রোঁ আর কোনো বিবৃতিও দিতে পারবেন না। কোনো প্রার্থী এবং গণমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে কিছু বলতে পারবে না।
জনগণকে বিভ্রান্ত করতে ফাঁস করা ইমেলইগুলোতে আসল ইমেইলগুলোর সঙ্গে ভুয়া ইমেইল জুড়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ম্যাক্রোঁর প্রচারণা শিবির, জানিয়েছে বিবিসি।
বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। এর কারণ হিসেবে তিনি নির্বাচনের আইনের নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যে নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে এবং তাতে আইন ভঙ্গ হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ম্যাক্রোঁর শিবিরের পক্ষ থেকে হ্যাকিং ও তথ্য প্রকাশের বিষয়টি কমিশনকে জানানো হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে শনিবার রাতে বৈঠকে বসবে কমিশন।
নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে এটি উল্লেখ করে গণমাধ্যমকে ইমেইলগুলোর বিস্তারিত প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে কমিশন। এ বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে বলে জানিয়েছে।