ইরাকের মসুলে ১৬ বছর বয়সী এক জার্মান নারী যোদ্ধাকে আটক করেছে ইরাকি বাহিনী। লিন্ডা ওয়েনজেল নামের এই জার্মানির পুলসনিৎজ শহরের অধিবাসী, এই কিশোরী আইএসের স্নাইপার ছিল বলে দাবি করা হচ্ছে।
উদ্ধার হওয়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় লিন্ডা ফ্যাকাসে ও ভীত চোখে তাকিয়ে আছে। ধুলায় মাখা শরীরে একটি রঙিন স্কার্ফ রয়েছে। উদ্ধারের পরে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছিল লিন্ডা অপহৃত ইয়াজিদি নারী। জার্মানির বিল্ড সংবাদপত্র জানিয়েছে, এক বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন লিন্ডা।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল হয়ে সিরিয়া-তুর্কি সীমান্ত দিয়ে আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে লিন্ডা। সেখানে গিয়ে ইন্টারনেটে পরিচয় হওয়া জঙ্গির সঙ্গে দেখা করে এবং তাকে বিয়ে করে। ওই জঙ্গিই লিন্ডাকে বাড়ি ছেড়ে আইএসে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করে।গত অক্টোবরে মসুলে ইরাকি বাহিনীর আক্রমণ শুরুর আগেই মসুলে আসে লিন্ডা।
লিন্ডার বন্ধুরা জানিয়েছে, ২০১৬ সালে অনলাইনে চ্যাটরুমে জঙ্গির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয় এবং ইসলাম গ্রহণ করে। এরপর সে আরবি শেখা শুরু করে। জানা গেছে সে স্কুলে কোরান শরীফ নিয়ে যেত এবং ইসলামে তার মুগ্ধতার কথা সবাইকে বলত। সে তার নাম বদলে মরিয়ম রাখে।
লিন্ডার মা গত বছরের জুলাইয়ে বলেন, সে যখন ঘরে ফিরে আসল না তখন আমি পুলিশকে খবর দেই। তার রুমে ইস্তাম্বুলের প্লেনের টিকেটের প্রিন্টআউট কপি পাওয়া যায়। আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই, এর আগে আমাদের মেয়ে কখনো আমাদের সঙ্গে মিথ্যা বলেনি। লিন্ডা তার মায়ের পরিচয়পত্র ও ভুয়া ব্যাংক অনুমোদন নিয়ে তুরস্ক যাত্রা করে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লিন্ডার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার অভিযোগে তদন্ত চলছিল। কিন্তু তার অনুপস্থিতির কারণে তদন্ত বন্ধ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে লিন্ডাকে ইরাকে নিয়োজিত মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে।
গত সপ্তাহে মসুল থেকে আইএস নির্মিত টানেল থেকে ৪ জন জার্মান নারীকে উদ্ধার করে। ইরাকি বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে অস্ত্র ও সুইসাইড বেল্ট ছিল যা সেনাদের উপর আক্রমণে ব্যবহার করার জন্য রাখা রয়েছে। তারা ২০জন বিদেশি নারী যোদ্ধা দলের সদস্য ছিল যার মধ্যে রাশিয়ান, তুর্কি, কানাডিয়ান ও চেচেন নাগরিক ছিল।
এটা জানা যায়নি এই নারীদের ইরাকে রাখা হবে নাকি জার্মানিতে প্রত্যর্পণ করা হবে। একজন শীর্ষ ইরাকি বিচারক জানিয়েছে, আইএসের বিদেশি যোদ্ধাদের ইরাকের আদালতে বিচার করা হবে।