ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্বাচনী ঘোষণায় মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির মেঘ। গতকাল এক সভায় তিনি জানিয়েছেন, ক্ষমতায় ফিরলে ইসরায়েল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের কিছু অংশ দখল করে নেবে। নেতানিয়াহুর ওই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আরব দেশগুলো।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণা শান্তি প্রক্রিয়ার সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করবে। আজ গাজার ১৫টি জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলে নির্বাচন। দক্ষিণ ইসরায়েলের অ্যাশবাদ শহরে গতকাল একটি সভায় নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, ‘পুনরায় ক্ষমতায় ফিরলে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের জর্ডন উপত্যকা এবং উত্তর ডেড সি দখল করা হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হয়েছেন। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ট্রাম্পের উদ্যোগ না-জানা পর্যন্ত তিনি ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের একাংশ দখলের পথে এগোবেন না।
নেতানিয়াহুর ঘোষণায় পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতি যে ঘোলাটে হবে তা জাতিসংঘ মেনে নিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেসের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ শান্তি আলোচনা শুরুর চেষ্টাকে ‘ধ্বংস’ করবে। নেতানিয়াহুর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিকে ‘জাতিবিদ্বেষমূলক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট চাভুসোলু।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, ফিলিস্তিনির ভাই-বোনেদের অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষার্থে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে বর্ণনা করে ২২ সদস্যের আরব লিগ জানিয়েছে, এই ঘোষণা শান্তি প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে আঘাত করবে। একই বক্তব্য সৌদি আরবেরও। ফিলিস্তিনির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা সরাসরি ফিলিস্তিনিবাসীর অধিকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। জর্ডনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ঘোষণা গোটা অঞ্চলকে যুদ্ধের মুখে ঠেলে দেবে। অদ্ভুত পরিস্থিতিতে ৫৭ সদস্যের অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
আরব দেশগুলো কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেও ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরোধীরা অবশ্য নির্বাচনী ঘোষণাকে তেমন আমল দিচ্ছে না। তাদের মতে, ওই ঘোষণা নির্বাচনী-চমক মাত্র। অ্যাশবাদে গতকাল নেতানিয়াহুর ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পরে সাইরেনের শব্দ শোনা গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীকে।
নেতানিয়াহুর সভায় রকেট হামলার অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো উত্তর এবং মধ্য গাজায় হামলা চালায়।