ডিএমপি নিউজঃ আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) জনাব এ কে এম শহীদুল হক বিপিএম, পিপিএম এর সভাপতিত্বে আজ বুধবার বিকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, ঈদুল আজহা উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে কোন ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য সকলকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।
আইজিপি বলেন, সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক থামানো যাবে না। তিনি সড়ক, রেল, নৌপথ, পশুরহাট এবং ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সভায় নির্ধারিত ঘাট ব্যতীত কোরবানীর পশু উঠানামা রোধ, পশুরহাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, পশুর হাট ইজারাদার কর্তৃক হাসিল হার প্রদর্শন, নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় না করা, কোরবানির পশু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কোরবানীর পশু পরিবহণে ব্যবহৃত নৌকা ও ট্রাকে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
কোরবানীর পশুর কৃত্রিম সংকটকারী, অতিরিক্ত হাসিল আদায়কারীসহ কোরবানীর পশুর হাটের আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকার চামড়া যাতে বাইরে না যায় এবং ঢাকার বাইরের চামড়া যাতে সীমান্তমুখী না হয় সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। বন্যা দুর্গত এলাকায় কোরবানীর/গৃহপালিত পশুর নিরাপত্তার জন্য কমিউনিটি পুলিশকে কাজে লাগাতে হবে।
আইজিপি জনগণের সার্বিক সহায়তা ও সচেতনতা কামনা করে বলেন, অপরিচিত ব্যক্তির নিকট থেকে পানীয় এবং খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। বড় ধরণের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশের সহায়তা নেবেন। অজ্ঞান ও মলম পার্টির অপতৎপরতা থেকে সর্তক থাকবেন।
ঈদে নৌ পথে ঘরমুখে যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণের লক্ষ্যে রাজধানীর সদরঘাট এবং বরিশালে কমিউনিটি নৌ পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য নৌ পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। নৌ পথে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং চাঁদাবাজি রোধে নৌ পুলিশ ইউনিট অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের সহায়তায় চেকপোস্ট স্থাপনসহ টহলের ব্যবস্থা করবে।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাতস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেয়া হবে। এছাড়া, জেলা এবং থানা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাস টার্মিনাল এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে টহল জোরদার, টিকেট কালোবাজারী ও মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঈদ জামাতস্থল, লঞ্চ, ট্রেন, বাস এবং মসজিদে জঙ্গি গোষ্ঠীর নাশকতা রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মোঃ মনিরুজ্জামান ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশু পরিবহন ও কোরবানীর পশুর হাটের নিরাপত্তা, মহাসড়ক, নৌপথ, রেলপথের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা, বিনোদন কেন্দ্রের নিরাপত্তাসহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সভায় এসবির অতিরিক্ত আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) মোঃ মোখলেসুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, নৌ, ট্যুরিস্ট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজিবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারগণ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।