ঈদুল আযহা উপলক্ষে ২৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে রেলওয়ে আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। গত রোজার ঈদের মতো এবারও রাজধানীর কমলাপুরসহ ৫ স্থান থেকে একযোগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এর মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে স্টশনে বিক্রি হবে যমুনা সেতু হয়ে সমগ্র পশ্চিমাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে দেয়া হবে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট, তেজগাও স্টেশন থেকে বিক্রি করা হবে ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী ট্রেনের টিকিট, বনানী স্টেশন থেকে বিক্রি হবে নেত্রকোনাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেসের টিকিট ও রাজধানীর ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলভবন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে। প্রতিদিন সকাল ৯ থেকে ৪ টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি করা হবে। একজন যাত্রী ৪টি’র বেশি টিকিট সংগ্রহ করতে পারবে না বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়। এদিকে আগামী ১৭ জুলাই থেকে ঢাকা-বেনাপোল-যশোর রুটে চলাচল করবে বিরতিহীন নতুন ট্রেন ‘বেনাপোল এক্সাপ্রেস’।
জানা গেছে, ঈদুল আযহা উপলক্ষে রেলওয়ে ঈদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে বুধবার রেলভবনে বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৯ জুলাই থেকে রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ২ আগস্ট পর্যন্ত এই অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এবারও কমলাপুর স্টেশনের চাপ কমাতে রাজধানীর ৫টি স্থান থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া ঈদের আগে বেনাপোল এক্সপ্রেস নামের নতুন একটি ট্রেন নামানো হবে বলে জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ে ৮ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। ট্রেনগুলো হলো-দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল (১ জোড়া): ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (২ জোড়া) : চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, মৈত্রীর রেক দিয়ে খুলনা ঈদ স্পেশাল : খুলনা-ঢাকা-খুলনা, ঈশ্বরদী ঈদ স্পেশাল : ঢাকা-ঈশ্বরদী-ঢাকা, লালমনি ঈদ স্পেশালঃ লালমনিরহাট-ঢাকা-লালমনিরহাট, সোলাকিয়া স্পেশাল-১: ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরববাজার, সোলাকিয়া স্পেশাল-২: ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ- ময়মনসিংহ, পবিত্র ঈদের দিন। ৫ দিন পূর্ব থেকে ঈদের পূর্ব দিন পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনসমূহের অফ-ডে থাকবে না।
এ দিকে আগামী ১৭ জুলাই চালু হচ্ছে ঢাকা-বেনাপোল-যশোর রুটের নতুন ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেস। এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন এই ট্রেনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী দিন বেলা সোয়া একটায় ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। এ ট্রেনে বগি থাকবে ১২টি। ৮৯৬ আসনের এই ট্রেন প্রতিদিন বেনাপোল স্টেশন থেকে ছেড়ে যশোর, ঈশ্বরদী জংশন ও ঢাকা বিমানবন্দরে যাত্রী ওঠানো-নামানোর জন্য সাময়িক বিরতি দিয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের শেষ হবে। বেনাপোল থেকে এ ট্রেনের শোভন চেয়ারের টিকিটের মূল্য ৫০০, এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) চেয়ার ১০০০ ও এসি কেবিনের দাম ১২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আধুনিক এই ট্রেনের কোচগুলো (বগি) ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনটি ইতিমধ্যে চালানো হয়েছে। কোরবানির ঈদযাত্রায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এই ট্রেনে চলাচলের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে রেলওয়ে মহাপরিচলক মো. শামছুজ্জামান সাংবাদিকদেরকে বলেন, ১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বেনাপোল এক্সপ্রেসের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরে বিরতিহীন এই ট্রেন সার্ভিসটি চলাচল শুরু হবে। ট্রেনটি ঢাকা থেকে বেনাপোল হয়ে যশোর পর্যন্ত চলাচল করবে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা কোচ দিয়ে নতুন ট্রেনটি চালু করা হবে। এ ট্রেনে বিমানের মতো বায়ো-টয়লেট সুবিধা রয়েছে। আসনগুলোও আধুনিক। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। আবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। প্রতিদিন সকাল আটটার মধ্যে ট্রেনটি বেনাপোল বন্দরে পৌঁছে যাবে।