ডিএমপি নিউজঃ আমরা আপনাদের সাথে আছি, আপনাদের পাশে আছি, আপনারা নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করুন, উৎসব করুন। যেকোন অপরাধ প্রতিরোধ করতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ নজরদারি রাখছে। ঢাকা মহানগরীতে কোন ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানি, অজ্ঞান পার্টি থাকতে পারবে না, যদি কেউ চেষ্টা করে আপনাদের সহায়তায় তাদের কঠোর হাতে দমন করবো।
আজ ২৬ মে, ২০১৯ দুপুর ০১.৩০টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ঈদবস্ত্র বিতরণকালে এমনটি জানান ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম। ডিএমপি’র তেজগাঁও বিভাগের আয়োজনে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে ঈদবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
সকলকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে কমিশনার বলেন, পুলিশ এই সমাজের মানুষ, আপনাদের আপন জন, আপনাদের সন্তান, আপনাদের ভাই। আইন প্রয়োগ, শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও দুর্বৃত্তদের দমন করতে গিয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের কঠিন হতে হয়। অপরাধীকে সমীহ করলে আইন শৃঙ্খলা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। তাদের উপর পুলিশি মেজাজ দেখাতে হয়। আর যিনি ভালো তার প্রতি আমাদের ব্যবহার অনেক ভদ্র, মাথা নিচু করে তার প্রতি সম্মান জানায়। কারণ আমরা প্রজাতন্ত্রের সেবক। আমাদের সামনে অনেক অসহায় মানুষ রয়েছে এই ঈদে তাদের মুখে যদি হাসি না থাকে, তাহলে আমাদের ঈদ যতার্থ হবে না।
মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে কমিশনার বলেন, মাদক ক্যান্সারের থেকে ভয়াবহ। এই ঢাকা মহানগরীতে মাদক ব্যবসাকে চিরতরে বন্ধ করব। কেউ যদি মাদকের ব্যবসা করে, মাদক খায় ও মাদকের আখড়া বসায় তাহলে আমাদেরকে জানাবেন। আপনার পরিচয় গোপন রাখা হবে। পরিবারের কেউ মাদকাসক্ত হলে সেই পরিবার জাহান্নামে পরিনত হয়। মাদক ব্যবসা যেই করে পুলিশকে খবর দিন, আমরা তাকে গুড়িয়ে দিবো। আমরা জঙ্গিবাদকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি, মাদককেও সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো।
তিনি আরো বলেন, ঈদ উপলক্ষে মার্কেট, শপিং মল, বাস টর্মিনাল, লঞ্চ ঘাট ও রেল স্টেশনে অনেক পুলিশ মোতায়েন করেছি। পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাতে করে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করে নগরবাসী নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারে। ঈদে ঢাকা শহর ফাঁকা হয়ে যাবে। এই ফাঁকা ঢাকা শহরে আমাদের পাহাড়া থাকবে, বাসা-বাড়ি, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ড থাকবে আমরাও থাকবো। সবাই মিলে একটা নিরাপত্তা বলয় করবো। থাকবে নিরাপত্তা চেকপোস্ট, তল্লাশি ও রাস্তায় বেরিকেড ব্যবস্থা।
সকলের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, ঈদে সবাই বাড়ি যাচ্ছে কিন্তু আমরা পুলিশ বাড়ি যেতে পারছি না। আমাদেরও পরিবার-আত্মীয়স্বজন রয়েছে, তাদের দেখতে ইচ্ছা করে কিন্তু আমরা গেলে আপনাদের নিরাপত্তা কে দিবে? আপনারা যে যেখানেই থাকেন পরিবারের সাথে ইফতার করেন কিন্তু আমরা পরিবারের সাথে ইফতার করতে পারি না। রাস্তায় দাড়িয়ে একটি খেজুর ও পানি খেয়ে ট্রাফিক পুলিশ ইফতার করছে আপনাদের জন্য।
সকলের প্রতি আহবান জানিয়ে কমিশনার বলেন, আমরা চাই চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী, অজ্ঞান পার্টি এদেরকে আপনারা প্রতিহত করবেন। এদের খবর আমাদের দিবেন। যাতে করে আমরা তাদের গ্রেফতার করে আদালতে বিচারার্থে কাঠগড়াই দাঁড় করাবো। এই ঢাকায় নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নত করার দুঃসাহস কেউ দেখালে, তার বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিবে।
এ সময় অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে তেজগাঁও বিভাগে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ১৫ শত পিস ও মিরপুর বিভাগের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ৪ নং গেইট সংলগ্ন এলাকায় ২ হাজার পিস ঈদবস্ত্র (শাড়ি, লুঙ্গি, ও ছোট বাচ্চাদের পোশাক) বিতরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আবদুল বাতেন বিপিএম, পিপিএম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর) মহাঃ আশরাফুজ্জামান বিপিএম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বিপিএম (বার), পিপিএম, মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আহম্মাদ বিপিএম, পিপিএম সহ ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।