দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদ-ঊল-আযহা। অতিমারির মাঝে এটা দ্বিতীয় কোরবানির ঈদ। কোরবানি ঈদের আগে গৃহিণীদের কাজ আরও বেড়ে যায়। কারণ ঈদ-ঊল-আযহার আগে অনেক কাজ আছে যেগুলো গুছিয়ে রাখতে হয়। না হলে ঈদের দিন পড়তে হয় বিপাকে। এটা সেটা হাতের কাছে না পেলে যেমন ঈদের দিন বিরক্ত হবেন, সেইসঙ্গে সময়ও নষ্ট হবে। তাই ঈদ-ঊল-আযহার প্রস্তুতি নিন এখন থেকেই।
কোরবানির যন্ত্রপাতি গুছিয়ে রাখুনঃ ঈদ-ঊল-আযহায় মুসলমানরা আল্লাহকে খুশি করতে সবাই তার সাধ্যমতো পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। তাই পশু জবাই করার জন্য খুটিনাটি যন্ত্রপাতি হাতের নাগালে রাখতে হবে। অনেকের বাড়িতেই হয়তো পুরোনো ছুরি, বটি বা ইত্যাদি যন্ত্রপাতি থেকে থাকবে। সেগুলো ঈদের আগেই ধারালো করে নিন এবং গরম পানিতে ১-২ মিনিট ডুবিয়ে রেখে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এতে জীবাণু আর না থাকবে না। আর যাদের যন্ত্রপাতি নেই, তারা ঈদের আগেই কিনে রাখুন।
ঈদের বাজারঃ ঈদের বাজার বলইতেই আমরা বুঝি সেমাই, চিনি, মশলা, সুগন্ধি চাল, ঘি, তেল ইত্যাদি কেনা। যেহেতু ঈদের বাকি আর মাত্র কয়দিন, তাই সময় বাঁচাতে এখেই করে রাখুন ঈদের বাজার। সেমাই-চিনি থেকে শুরু করে ঈদের দিন মিষ্টান্ন রান্নার জন্য যাবতীয় পদ তৈরির প্রয়োজনী উপকরণ কিনুন মনে করে।
পরিচ্ছন্নতাঃ কোরবানির সময় একটি বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে হয়, সেটি হলো পরিচ্ছন্নতা। এসময় কোরবানিকৃত পশুর রক্ত ও বর্জ্য জমে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে। ছড়াতে পারে বিভিন্ন রোগ-জীবাণুও। তাই এসব বর্জ্য পরিষ্কারের ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রাখুন। পশু জবাইয়ের পর যেন বর্জ্য জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
মসলাপাতিঃ ঈদের দিনের অন্যতম অংশ হলো রান্না। রান্নার কাজ অনেকটাই গুছিয়ে রাখা যায় যদি আগে থেকে কিছু কাজ সেরে রাখা যায়। যেমন ধরুন, রান্নার জন্য যেসব মসলাপাতি দরকার, তা আগে থেকে গুছিয়ে বা তৈরি করে রাখতে পারেন। যেসব মসলা গুঁড়া করা দরকার সেগুলো গুঁড়া করে, যেগুলো বেটে রাখা দরকার সেগুলো বেটে কিংবা ব্লেন্ড করে রাখতে পারেন। এতে প্রয়োজনের সময় হাতের কাছে সব মসলা পেয়ে যাবেন। রান্না হবে অনেকটাই সহজ।
আপ্যায়নঃ ঈদের দিনে অতিথি আপ্যায়নের একটি পর্ব থাকে। উৎসবের অংশ হিসেবে আত্মীয়-পরিজনের বাড়ি যাওয়ার রীতি রয়েছে। তবে এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সীমিত হয়ে এসেছে আমাদের চলাফেরা। তাই প্রয়োজন ছাড়া কারও বাড়িতে যাওয়া থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। তবে বাড়িতে অতিথি এলে তাদেরকে ভালোভাবে আপ্যায়ন করুন।
ঘর গোছানোঃ ঘর গোছানো, পরিপাটি করে সাজানোও উৎসবের অংশ। মহামারির মন খারাপের দিনে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে ঘরদোর গুছিয়ে রাখুন। ঈদের উৎসবে সবচেয়ে ভালো চাদরটি বিছানায় শোভা পাক, সবচেয়ে ভালো পর্দাগুলো টাঙিয়ে দিন দরজা-জানালায়। বাড়ির সব জায়গা থাকুক পরিচ্ছন্ন। যেন ঘরের দিকে তাকালেই মন ভালো হয়ে যায়।
নিজের দিকে খেয়াল রাখুনঃ সবকিছুর দিকে খেয়াল রাখতে গিয়ে নিজের দিকে খেয়াল রাখার কথা ভুলে যাবেন না। নিজে পরিপাটি থাকুন, ঈদের দিন সতেজ ও সুস্থ থাকুন। সব কাজ সামলাতে গিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে বেখেয়ালি হবেন না। সময়মতো খাবার খান। উৎসবে যেহেতু ভারী খাবার বেশি থাকে, তাই স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। শরীরের জন্য ক্ষতি ডেকে আনতে পারে এমন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।