ডিএমপি নিউজঃ জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা জায়নামাজ ও ছাতা ব্যতীত কোন কিছু সঙ্গে আনতে পারবেন না। পথিমধ্যে প্রত্যেক মুসল্লিকে তিন ধাপে তল্লাশি শেষে ঈদগাহে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। আজ (৩ জুন) সকাল ১১ টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ডিএমপি কর্তৃক গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের একথা বলেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম (বার), পিপিএম।
জাতীয় ঈদগাহের গৃহীত নিরাপত্তা সম্পর্কে কমিশনার বলেন, জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজকে কেন্দ্র করে আমরা নিয়েছি কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নিরাপত্তায় থাকবে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ। প্রস্তুত থাকবে সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড। ঈদগাহে প্রবেশের পূর্বে প্রত্যেক মুসল্লিকে তিন ধাপে তল্লাশির মাধ্যমে ঈদগাহে ঢুকতে দেয়া হবে। একই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি বায়তুল মোকাররম মসজিদেও। শিক্ষাভবন, মৎস্যভবন ও প্রেসক্লাবের সামনে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে সবাইকে তল্লাশির মাধ্যমে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। এ এলাকায় কেউ গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। এর পরের ধাপে মূল গেইটে এবং ঈদগাহের ভিআইপি জোনের আগে আরো দুই দফা আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। এছাড়াও ডিএমপি’র ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে ঈদগাহ মাঠ সুইপিং করা হবে। পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। জাতীয় ঈদগাহ এবং বায়তুল মোকাররমে স্থাপিত অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম থেকে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে।
তিনি বলেন, ঈদকে ঘিরে ঢাকাজুড়ে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে কয়েক পর্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো। রমজানে প্রথম পর্ব শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে। রমজানে এখনো রাজধানীতে উল্লেখযোগ্য কোন অপরাধ সংগঠিত হয়নি। আশা করছি ঈদের নামাজও হবে শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর। ঈদ পরবর্তী সময়েও ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তায় পুলিশের বিশেষ প্রস্তুতি রয়েছে।
সম্মানিত নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে কমিশনার বলেন, ঈদ জামাতে অংশগ্রহনের জন্য আগত মুসল্লিদের জায়নামাজ এবং প্রয়োজনে ছাতা ছাড়া অন্যকিছু আনবেন না। ঈদগাহে প্রবেশের পূর্বে সবাইকে তল্লাশি করা হবে, এজন্য যদি গেইটে দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হলেও সবাই ধৈর্য্যসহকারে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। পুলিশ সদস্যরা প্রয়োজনে মুসল্লিদের সঙ্গে আনা জায়নামাজ কিংবা ছাতা খুলে তল্লাশি করবে। আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ঈদগাহে আসার পূর্বে তল্লাশিকালে পুলিশকে সহযোগিতা করুন। ভ্যানিটি ব্যাগ, ব্যাকপ্যাক, দা, ছুরি, কাচি, যেকোন ধারালো বস্তু, মোবাইল ফোন, দার্হ্য পদার্থসহ অন্য সকল জিনিস আনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
দূর্ঘটনা এড়াতে ঈদের নামাজ শেষে সকলে একসাথে একই গেইট দিয়ে না বেরিয়ে ধীরে সুস্থে ভিন্ন ভিন্ন গেইট দিয়ে ঈদগাহ ত্যাগ করার আহবান জানান ডিএমপি কমিশনার।
নাগরিকদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে কোন সমস্যা-প্রয়োজনে পুলিশকে জানাবেন। সন্দেহজনক কিছু দেখলে ঈদগাহে স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুম এবং ৯৯৯ এ জানানোর অনুরোধ রইলো।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কমিশনার বলেন, ঈদে কিংবা ঈদ জামাতে সুস্পষ্ট কোন নিরাপত্তার হুমকি নেই। তবে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যথেষ্ট সতর্ক থাকার কারণ রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছি। ঈদকে ঘিরে নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাই কারো ভীত হওয়ার কারণ নেই।
এর আগে জাতীয় ঈদগাহে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম, ঈদগাহের ভেতর পরিদর্শন এবং কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ডগ স্কোয়াড দিয়ে একটি নিরাপত্তামূলক মহড়া প্রত্যক্ষ করেন ডিএমপি কমিশনার।
জাতীয় ঈদগাহ কেন্দ্রিক গাড়ি পার্কিং নির্দেশনাঃ
জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের গাড়ি পার্কিং করা যাবে নিম্নোক্ত স্থানে।
১। মৎস্য ভবন হতে শাহবাগ
২। আইইবি’র ভেতরে পার্কিং
৩। কার্পেট গলি
৪। দোয়েল চত্বর ব্যারিকেড এর বাহিরে
৫। ফজলুল হক হল ব্যারিকেড এর বাহিরে ও
৬। প্রেসক্লাব লিংক রোড ব্যারিকেড এর বাহিরে গাড়ি পার্কি করা যাবে।
প্রয়োজনে সরাসরি ফোন করুনঃ
পুলিশ কন্ট্রোল রুমঃ ০১৭১৩-৩৯৮৩১১, ৯৫৫৯৯৩৩, ৯৫৫১১৮৮, ৯৫১৪৪০০।
ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমঃ ০১৭১১-০০০৯৯০, ০১৭০৭-৮০৬১১১, ০১৭০৭-৮০৬২২২, ০১৭০৭-৮০৬৮৮৮।
জাতীয় জরুরী সেবা : ৯৯৯