এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার খাতা পুন:নিরীক্ষনে বিভিন্ন বিষয়ে নম্বর বৃদ্ধি ছাড়াও পরিবর্তন হয়েছে অনেক পরীক্ষার্থীর ফল। আগের ফলে ফেল করা অনেকেই পাস করেছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে অনেকেই। সবচেয়ে বেশি ফল পরিবর্তন হয়েছে ঢাকা বোর্ডে, যেখানে এক হাজার ৪৫ জনের জিপিএ পরিবর্তনের পাশাপাশি আগে ফেল করা ১৬৯ জন শিক্ষার্থী নতুন করে পাস করেছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৪ জন শিক্ষার্থী।
গতকাল বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড পৃথকভাবে তাদের পুন:নিরীক্ষনকারি শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে যোগাযোগ করে ফল পরিবর্তনের তথ্য পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও স্ব স্ব বোর্ডে গিয়ে নিজেদের ফল জানতে পারছে।
ফলাফলে এই ভুলের কারণ সর্ম্পকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত ফল প্রকাশের কারনে তাড়াহুরাই এই অবস্থার মূল কারন। মূলত তিন ধরনের ভুল ধরা পরছে। কিছু খাতায় নম্বরের যোগ ফল ঠিক ছিল না, কিছু উত্তরের নম্বর যোগ না করা এবং ওএমআর ফরমে বৃত্ত ভরাটেও বেশ কিছু ভুল পাওয়া গেছে।
প্রক্রিয়া সহজ, হয়রানিমুক্ত ও প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ায় ব্যাপক সাড়া পড়ে এইচএসসির খাতা পুন:নিরীক্ষনে। পুন:নিরীক্ষনে ঢাকা শিক্ষা বার্ডের ফলাফলে সবচেয়ে বেশি ভুল ধরা পরেছে। যদিও এ বোর্ডে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এবার মূল ফল প্রকাশের পর ৪৭ হাজার ৭৩৫ জন পরীক্ষার্থী ১৩টি বিষয়ে তাদের এক লাখ ৩৩ হাজার ৬২২টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছিল।
ফল চ্যালেঞ্জ করে চট্টগ্রাম বোর্ডে পুনঃনিরীক্ষণে ফেল থেকে পাশ করেছে ৫০ শিক্ষার্থী, নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৩ জন। পুনঃনিরীক্ষণে গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে ৩৩২ জন পরীক্ষার্থীর। আর ফেল করা ২৩ জনের গ্রেড বাড়লেও তারা পাস করতে পারেনি। এ বোর্ডে ১৪ হাজার ৯৪৯ জন পরীক্ষার্থী ১৩টি বিষয়ে তাদের ৪৭ হাজার ৭৯০টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছিল।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল খালেক সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, তাদের বোর্ডে পরিবর্তন হয়েছে ২৩৩ জনের নম্বর। ফেল থেকে পাস করেছে ৮৩ জন, নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম কবির তপাদার জানিয়েছেন, এ বোর্ডে নম্বর পরিবর্তন হয়েছে ১১৩ জনের। ৩৯ জনের ফল বা গ্রেড পরিবর্তন হয়েছে। ফেল থেকে পাস করেছে ১৩ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক জন শিক্ষার্থী।
এছাড়া যশোর শিক্ষা বোর্ডে ফল পরিবর্তন হয়েছে ১১৬ জনের। ফেল থেকে পাস করেছে ৩৮ জন এবং নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৪ জন। আর আগে ফেল বলা হলেও এখন তাদের একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আলিম পরীক্ষায় পরিবর্তন হয়েছে ১৭৩ জনের ফল। ফেল থেকে পাস করেছে ১০৪ জন পরীক্ষার্থী। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ জন শিক্ষার্থী।
এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ইংরেজি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছিল রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী। ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ইংরেজি বিষয়ে এবার ৫৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়ে। প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছিল।