ক্লান্তিকর দিন শেষে একটু আরামের ঘুম সবার জন্যেই দরকার। শরীর ও মন সুস্থ রাখার জন্যে পরিমিত আরামদায়ক ঘুমের বিকল্প নেই। ঠিকমত ঘুমাতে না পারলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয় না, যার প্রভাব পরে কর্মক্ষেত্রে। সারাদিনের প্রচন্ড গরম সহ্য করা গেলেও ঘুমাতে গেলে গরম বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে বাসায় যদি এয়ার কন্ডিশনার বা এয়ার কুলার না থাকে। উচ্চ তাপমাত্রায় আমাদের মগজ শরীরকে না ঘুমানোর নির্দেশ দেয় ফলে বিড়ম্বনা বেড়ে যায় বহুগুণ। তাহলে গরমে শান্তিতে ঘুমানোর জন্যে কী করা যায়? একটু কৌশল অবলম্বন করলেই এই গরমেও শান্তিতে ঘুমানো যায় খুব সহজেই।
যেনে নিন কৌশলগুলোঃ
১. ঘুমাবার আগে ভালো করে গোসল করে নিন। পানির স্পর্শ শরীরের মাংস পেশীকে শিথীল করে, দেহমনে ছড়িয়ে পড়ে একটা আরামদায়ক আমেজ। ঘুমাতে যাবার আগে একটা আরামদায়ক স্নান আপনাকে দেবে একটা শান্তির ঘুম।
২. গোসল না করলেও ভালো করে হাত মুখ ধুয়ে নিন। এবং একদম পাতলা আর ঢিলেঢালা পোশাক পরুন ঘুমাতে যাবার জন্য।
৩. যাদের সিলিং ফ্যানের নিচেও গরম লাগে, তারা একটি স্ট্যান্ড ফ্যান বা টেবিল ফ্যান কিনে নিন (এসির বিকল্প হিসেবে এগুলো দারুণ কার্যকর)। আর বিদ্যুৎ চলে গেলে জানালাগুলো খুলে দিন। পর্দা টানা থাকলেও খোলা জানালা দিয়ে বাতাস প্রবেশ করবে ঘরে।
৪. বিছানার চাদর রোজ রাতে বদলে নিন। পরিষ্কার বিছানা মনে এক রকমের প্রশান্তি তৈরি করে। আর প্রশান্ত মনে ঘুম ভালো হয়। সুতির চাদর হলেই ভালো।
৫. ফোমের বিছানায় গরম বেশী লাগে। তাই জাজিম ও তোশক ব্যবহার করুন। ফারের বালিশের বদলে শিমুল তুলার বালিশে দিন মাথা। তবে একেবারে ফ্লোরে মাদুর বিছিয়েও ঘুমাতে পারেন। প্রথমে একটু অসুবিধা হলেও কয়েকদিনে অভ্যাস হয়ে গেলে দারুণ আরাম পাবেন।
৬. ঘরের জানালায় হাল্কা বা পাতলা পর্দা ব্যবহার করুন। তাতে ঘরে বাতাস চলাচল ভালো হবে আর আপনিও ঘুমাতে পারবেন শান্তিতে।
৭. যাদের খুব বেশী ঘেমে যাবার প্রবণতা তারা ট্যালকম পাউডার মেখে নিন শরীরে। মেনথল ফ্লেভারের পাউডারও বেশ আরাম দেবে। ঘেমে নেয়ে থাকলে তো এমনিতেই ঘুম হবে না।
৮. ঘুমাবার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে খেয়ে নিন রাতের খাবার। এমন কিছু খাবেন না যাতে পাকস্থলীতে অস্বস্তি হয় বা রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। এই গরমে বিকালের পর চা কফি না খাওয়াই ভালো। খেতে হলে উষ্ণ দুধ খান বা কোনও হাল্কা শরবত বা জুস।
৯. অনেকে সন্ধ্যায় বা রাতে ব্যায়াম করেন। এই গরমে সেটা না করাই ভালো। করতে হলে ব্যায়ামের পর ভালভাবে গোসল করুন ও পোশাক বদলে নিন।
১০. গরমের দিনে এক বিছানায় বেশী মানুষ ঘুমাতে ভালো লাগে না, অস্বস্তি হয়। চেষ্টা করুন একটু নিরিবিলি ঘুমাবার। সেটা সম্ভব না হলে পাশের মানুষ ও আপনার মাঝে একটি কোল বালিশ রাখতে পারেন।
১১. আপনার বাড়ির ভেতরের সঙ্গে বাইরের তাপমাত্রার পার্থক্য যদি বেশি হয় তাহলে বুঝতে হবে গরম বাতাস বাড়ির ভেতর আটকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে একজস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন। এতে ভেতরের গরম বাতাস বের হয়ে যাবে। ফলে ঘর ঠাণ্ডা হবে। বিশেষ করে রান্নাঘরে অবশ্যই একজস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন।
১২. বেশি করে পানি পান করুন। গরমের সময় বাড়তি পানি আপনাকে সুস্থ থাকতে ও আরামে ঘুমাতে সহায়তা করবে।
আশা করি এই কৌশল গুলো প্রয়োগ করলে কিছুটা হলেও আরামের ঘুম ঘুমাতে পারবেন এই প্রচন্ড গরমেও।