মফস্বল এলাকা ও জেলা শহরগুলোতে ৫শ’ টাকায় এক এমবিপিএস (মেগাবাইট পার সেকেন্ড) গতির ইন্টারনেট দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে করে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য দেশে বেসরকারিভাবে দুই লাখ ইন্টারনেট সংযোগ (কানেক্টিভিটি) তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এর ফলে দেশের স্কুল, কলেজ, সরকারি অফিস, ডিজিটাল সেন্টার ও পাঠাগারসহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সর্বোচ্চ সুবিধা পাবে। শুধু জেলা বা উপজেলা নয়, ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানও এ সুবিধার আওতায় আসবে বলে জানা গেছে।
উদ্যোগটির ‘পরিকল্পনাপত্র’ সম্প্রতি সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে জমাও পড়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির (ব্রডব্যান্ড) ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে বলে সংগঠনটির নেতারা জানিয়েছেন। ফলে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও বাড়বে।
সেই সঙ্গে দেশজুড়ে ইন্টারনেটের একদাম বাস্তবায়ন করা যাবে। এর আগে সরকার ঘোষণা দিয়েছিল, জেলা, উপজেলা হয়ে ইউনিয়ন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া হবে। এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হলে জেলায় ১০০ উপজেলায় ৪০ এবং ইউনিয়নে এক গিগাবাইট গতির ইন্টারনেট পৌঁছে যাবে। সম্প্রতি প্রকল্পটি একনেক সভায় পাসও হয়েছে।
এর আগে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রকল্পটির তৃতীয় ফেজ ‘ইনফো সরকার-৩’ প্রকল্পে এক হাজার ২০০ ইউনিয়নকে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের আওতায় আনা ও ৫৫৪টি মিনি বিপিও সেন্টার গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় একহাজার ৩১৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
সম্প্রতি একনেক অনুমোদিত বর্তমান প্রকল্পের ব্যাপ্তি বেড়েছে। আইএসপিএবি বলছে, সরকার যে টাকা খরচ করে কাজটি সম্পন্ন করবে সেটি তারা (আইএসপিএবি) করতে আগ্রহী। এর ফলে সরকারের বিপুল অর্থ সাশ্রয় হবে।
দুই লাখ সংযোগ তৈরির পরে যে পরিমাণ ব্যান্ডউইথ উদ্বৃত্ত থাকবে তা স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রি করার সুযোগ থাকবে। ওটা দিয়েই আমরা খরচ তুলে নিতে পারব।
রাজধানীর চেয়ে ঢাকার বাইরে ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বেশি উল্লেখ করে আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, আমাদের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকার বাইরে ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ কমানো সম্ভব। তাহলে সরকারের প্রতিশ্রুতি দেয়া ইন্টারনেটের দামও কমানো যাবে। তা না হলে ঢাকার বাইরে ইন্টারনেটের দাম আরো বাড়বে।
উল্লেখ্য, ঢাকার বাইরে বিশেষ করে মফস্বল এলাকায় এক মেগা গতির ইন্টারনেট কিনতে ব্যয় হয় প্রায় ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা হলো ট্রান্সমিশন খরচ। এই ট্রান্সমিশন খরচ কমানো না হলে কোনোভাবেই ইন্টারনেট খরচ কমানো যাবে না।
আইএসপিএবির সভাপতি আরো জানান, এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে দেশে ‘এক দেশ এক দাম’-এ ইন্টারনেট সেবা দেয়া যাবে। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে জনসম্পদ উন্নয়ন ও বেকার সমস্যার সমাধান করা যাবে।