হিজাব না পরার কারণ দেখিয়ে দেশী-বিদেশি এনজিওতে নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এই নির্দেশ লঙ্ঘন করা হলে তাদের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেয়া হয়েছে। তালেবান তাদের নির্দেশের পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে বলছে, এনজিও কর্মীরা হিজাব না পরে ইসলামী শরিয়ার পোশাকের আইন ভঙ্গ করছে।
শনিবার জারি করা তালেবানের এই নির্দেশকে মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন জানিয়ে নিন্দা করেছে জাতিসংঘ। তাদের এই নির্দেশ এমন সময়ে দেয়া হয়েছে, যার কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এর ফলে লাখ লাখ মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
‘’সারা বিশ্ব জুড়েই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে নারীরা প্রধান ভূমিকায় কাজ করেন। এই সিদ্ধান্ত আফগান জনগণের জন্য বিপর্যয়কর হবে,’’ মি. ব্লিঙ্কেন বলেছেন। তালেবানের এই নির্দেশকে ‘’মানবাধিকারের মৌলিক নীতিগুলোর গুরুতর লঙ্ঘন’’ বলে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
এ সপ্তাহেই আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সেদেশের নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নিষিদ্ধ করে এবং প্রাইভেট টিউশন কেন্দ্রগুলোর প্রতি আদেশ দেয়, যেন তারা কোন ছাত্রীকে শিক্ষাদান না করে। সেই নির্দেশও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
তবে মিশরের আল আজহার মসজিদের গ্র্যান্ড ইমাম বলছেন, আফগানিস্তানে মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত তালিবান নিয়েছে – তা ইসলামী শরিয়া আইনের সাথে সাংঘর্ষিক।
ইমাম শেখ আহমেদ আল-তায়েবকে সুন্নি ইসলামের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বলে বিবেচনা করা হয়। এক বিবৃতিতে তিনি বলছেন, শরিয়া আইনে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নারী ও পুরুষকে জ্ঞানার্জন করতে বলা হয়েছে।
গত বছর আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখল করার সময় যদিও তালেবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, নব্বুইয়ের দশকের তুলনায় এবার তাদের শাসন অনেক নমনীয় হবে, তারপরেও তারা একের পর এক নারী অধিকার খর্ব করে চলেছে।তথ্যসূত্র:বিবিসি বাংলা