পেঁয়াজ কাটতে গেলেই চোখ থেকে পানি বের হয় অনেকের। এমনকি, নিজে পেঁয়াজ কাটা হচ্ছে এমন সময়ে সামনে বসে থাকলেও অনেকের চোখেই ঝাঁজ লাগে। এতে যে জ্বালার উদ্রেক ঘটে তাতে অনেকেই মনে করেন, হয়তো এতে চোখ পরিষ্কার হয়। কিন্তু চক্ষু বিশেষজ্ঞরা একেবারেই তাতে সহমত নন। বরং এই জ্বালা যেমন অস্বস্তির, তেমন এই জ্বালাপোড়া চোখের জন্যও স্বাস্থ্যকর নয়। পেঁয়াজে উপস্থিত নানা সালফার জাতীয় যৌগের কারণেই এমনটা হয়। যেমন এর অন্যতম কারণ পেঁয়াজের অ্যামিনো এসিড সালফক্সাইড।
পেঁয়াজ কাটার সময় এর কোষের ভিতর থেকে অ্যালিনেজ নামক উৎসেচক ক্ষরণ হয়। এটি অ্যামিনো এসিড সালফক্সাইডকে সালফোনিক অ্যাসিডে পরিণত করে। এটি চোখের সংস্পর্শে এলেই এক নতুন যৌগ তৈরি করে যা চোখে জল আসতে বাধ্য করে।
কিন্তু বিজ্ঞানের এ সব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটা সত্ত্বেও কিছু ঘরোয়া উপায় জানা থাকলে পেঁয়াজ কাটতে বসলেও একেবারেই চোখ জ্বলবে না, একটুও পানি পড়বে না চোখ থেকে। এই উপায়ে সালফার বাদ গেলেও তা খাদ্যগুণ বা পুষ্টিতে প্রভাব ফেলে না। তাই নিশ্চিন্তেই এই উপায়ে কাটুন পেঁয়াজ।
- পেঁয়াজ কাটার সময় তার মূলের দিকটি (গোড়ার অংশ) কেটে ফেলে দিন। পেঁয়াজের বেশির ভাগ উৎসেচক পেঁয়াজের গোড়ার দিকে থাকে।
- খুব ধারালো ছুরি বা বটিতে পেঁয়াজ কাটুন। এতে পেঁয়াজের কোষগুলি কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে সালফার কম ক্ষরিত হয়।
- পেঁয়াজ কাটার আগে তার শুকনো খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে জলে ভিজিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ ভেজার পর এই পানি ফেলে দিন। ফের টাটকা পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে তার পর কাটুন পেঁয়াজ। এতে সবটুকু সালফার যৌগই প্রায় বেরিয়ে যায় পেঁয়াজ থেকে।
- খোসা ছাড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দিন পেঁয়াজ। আধ ঘণ্টা পর বের করে ভাল করে ধুয়ে কাটুন তা।
- লবণ-পানিতে ভিজিয়ে রাখুন পেঁয়াজ। মিনিট পনেরো রাখার পর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে তার পর তা কাটলে কোনও অসুবিধা হবে না।লবণ-পানি পেঁয়াজের সালফারকে শোষণ করে।
- ছুরি বা বটিতে ভিনিগার মাখিয়ে তা দিয়ে পেঁয়াজ কাটুন। ভিনিগার সালফার যৌগকে নিষ্ক্রিয় করে দেয় অনেকটাই। ফলে চোখের জ্বালা কমবে।