টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামে (এইচএলপিএফ) বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে।
পরিবর্তিত বিশ্বে দারিদ্র্য নির্মূল ও উন্নয়নে অগ্রগতি প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হওয়া ফোরামের আট দিনব্যাপী সম্মেলনের অংশ হিসেবে সোমবার তিনদিনের মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে এই প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে ৪৪টি দেশের এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে তাদের জাতীয় প্রতিবেদন উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছে।সংবাদ সংস্থা বাসসের বরাতে এ তথ্য জানা যায়।
আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের নেতৃত্বে ৮-সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল বৈঠকে যোগ দেয়। এদিন অন্যতম প্যানেল আলোচক হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বাস্তবায়ন বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ এসিডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ, ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডের যৌথ আয়োজনে ‘ব্যক্তি খাতে এসডিজি অর্জন : ২০৩০ সালের মধ্যে ব্যক্তি খাতের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকারি প্রণোদনা’ শিরোনামের সাইড ইভেন্টে অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী মুস্তাফা কামাল। এতে এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ‘কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না’ বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসডিজির লক্ষ্যসমূহের পূর্ণ বাস্তবায়নে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের নিবিড় সম্পৃক্ততা অত্যন্ত প্রয়োজন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ত্বরান্বিত করতে আমরা তিনটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছি। এগুলো হলো- ব্যবসা খাতকে উৎসাহিত করতে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ তৈরি, ট্যাক্স ও ভর্তুকি নীতিমালার মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে প্রণোদনা দেয়া এবং বহুজাতিক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ।
বাংলাদেশের মোট বিনিয়োগের প্রায় ৭৭ শতাংশ বেসরকারি খাত থেকে আসে উল্লেখ করে মুস্তাফা কামাল বলেন, বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ৪৫ শতাংশ। আমাদের সরকার বেসরকারি খাতের পূর্ণ বিকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ছাড়া পরিকল্পনামন্ত্রী ‘ফাস্ট ট্র্যাকিং পোভার্টি ইরাডিকেশন এন্ড এসডিজিস থ্রু দ্য ডেটা রেভ্যুলেশন’ শিরোনামে আরেকটি সাইড ইভেন্টেও অংশ নেন।
বাংলাদেশ আয়োজিত এই প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে এস্তোনিয়ার পরিবেশ বিষয়ক উপমন্ত্রী আডো লোহ্মুজ, নেপালের পরিকল্পনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান এবং জাতিসংঘ ও ইউএনডিপির উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি উপস্থাপনা ছিল, যাতে বাংলাদেশে তথ্যের সহজলভ্যতা এসডিজি বাস্তবায়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণে কিভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে তা তুলে ধরা হয়।
এইচএলপিএফ-এর দিনব্যাপী কর্মসূচিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য শামসুল আলম, পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল করিম, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জিআইইউ মহাপরিচালক আব্দুল হালিম এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী ছিলেন।