ডিএমপি নিউজঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মিজান শেখ, মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা @ আফরিন @ আন্নাফি, সুরাইয়া আক্তার @ কেয়া ও ফারিয়া বিনতে মীম। গত ১৮/০৭/১৮ ইং তারিখ রাতে বাড্ডা ও হাজারীবাগ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ বেলা ১২ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিং-এ হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ আবদুল বাতেন পিপিএম।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, রহমত উল্লাহ ইন্সপেক্টর মামুনে বন্ধু। রহমত উল্লাহ পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার। তাদের মধ্যে ৪/৫ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তারা দুইজনে বিভিন্ন নাটক ও সিরিয়ালে অভিনয় করত। আটককৃত আফরিনের সাথে রহমত পূর্বে অভিনয় করেছে। আফরিন কল করে রহমতকে তার বান্ধবির বার্থডে পার্টিতে আমন্ত্রণ জানায়। রহমত পার্টিতে একা না গিয়ে ইন্সপেক্টর মামুনকে সঙ্গে নিয়ে যায়। পার্টি করতে বনানীর বাসায় গেলে তাদেরকে বাসার দুই তলায় নিয়ে যায়। হঠাৎ করে স্বপন, দিদার, আতিক ও মিজান ঐ বাসায় ঢুকে অনৈতিক কাজের অভিযোগে মামুন ও রহমতউল্লাহকে আটকে রেখে মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে মামুন মারা যায়। মামুন মারা গেলে তারা হতবিহ্বল হয়ে যায়। রহমতের হাত-পায়ের বাঁধ খুলে দেয়। এক পর্যায়ে তারা মামুনের লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তী সময় ১০ জুলাই,২০১৮ তারিখ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন উলুখোলা এলাকায় রাস্তার পাশে একটি জঙ্গল মামুনের বস্তাবন্দি লাশ ফেলে পরিচয় গোপন করার জন্য লাশে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে চেহারা বিকৃত করে। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছে রহমত উল্লাহ। রহমতের দেখানো মতে গাজীপুরের উলুখোলা থেকে মামুনের বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
রহমতের দেয়া তথ্য মতে গত ১৮জুলাই, ১৮ ইং তারিখ রাতে বাড্ডা ও হাজারীবাগ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উল্লেখিত আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃত রহমতউল্লাহ বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত জানায়, গ্রেফতারকৃত মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা @ আফরিন @ আন্নাফি এর আমন্ত্রণে আসামী রহমতউল্লাহ ভিকটিম মামুনকে বনানীর মডেল টাউনস্থ রোড নং-২/৩ এর ৫ নং বাড়ীতে নিয়ে যায়। এজাহারভূক্ত আসামীরা উক্ত বাড়িতে মামুনকে মারধর করে হত্যা করে। পরবর্তী সময়ে মামুনের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে রহমতউল্লাহর গাড়ীযোগে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন উলুখোলা এলাকায় রাস্তার পাশে একটি জঙ্গল নিয়ে যায়। মামুনের পরিচয় গোপন করার জন্য লাশে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে চেহারা বিকৃত করা হয়।
উল্লেখ্য গত ০৮ জুলাই, ১৮ তারিখ সবুজবাগ থানায় মামুনের নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি জিডি করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ উক্ত জিডির ছায়াতদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১০ জুলাই, ১৮ তারিখ ভিকটিম মামুনের বন্ধু রহমতউল্লাহকে গ্রেফতার করে। উক্ত রহমতউল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদে সে মামুন এমরান হত্যার বর্ননাসহ জড়িত সকলের নাম প্রকাশ করে। ১০ জুলাই, ২০১৮ গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন উলুখোলা এলাকায় রাস্তার পাশে একটি জঙ্গল হতে ভিকটিম মামুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী সময় এ বিষয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়।