ডিএমপি নিউজ: ওরা ১১ জন কোন সিনেমার গল্প নয়। তারা দাপিয়ে বেড়াতো ঢাকা শহরের এপার থেকে ওপার। ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ছিনতাই করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। ডিবি পুলিশের পরিচয়ই ছিল তাদের প্রধান কৌশল। এমনই একটি ছিনতাইচক্রের ১১ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালি থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-সরোয়ার হোসেন ওরফে সরোয়ার খাঁ, মোঃ দুলাল (৩৮), আনোয়ার গুলদার (৪২), আমির (৩৮), মোঃ নাছির হাওলাদার (২৮), ইমন ওরফে কাজল কুমার দে (২৮), মোঃ ইকবাল (৩৪), মোঃ সোহাগ খান (২৩), মোঃ জাকির হোসেন (৩৮), মোঃ সুমন (৩০) ও মোঃ রমজান (২৭)।
এ সময় তাদের নিকট হতে একজোড়া হ্যান্ডকাপ, ২টি ডিবি জ্যাকেট ও ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে এসি কোতয়ালি মোঃ সাইফুল আলম মুজাহিদ ডিএমপি নিউজকে বলেন, ১৭ আগস্ট, ২০২০ সকালে কোতয়ালি থানার জনসন রোডে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে এক কাপড় ব্যবসায়ীকে পথরোধ করে জোরপূর্বক ৫৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সংক্রান্তে কোতয়ালি থানায় মামলা রুজু হয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলের আশাপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ১৯ আগস্ট ভোরে রায় সাহেব বাজার মোড় থেকে ছিনতাইয়ের ঐ ঘটনার অভিযোগে মোঃ সোহাগকে গ্রেফতার করা হয়। সোহাগের দেওয়া তথ্য মতে এই ১১ জন ছিনতাইকারী গ্রুপের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর একই দিনে (১৯ আগস্ট) গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানার দত্তপাড়া এলাকায় অভিযান করে এই চক্রের ইকবাল, জাকির ও সুমনকে গ্রেফতার করা হয়।
এসি কোতয়ালি ডিএমপি নিউজকে আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য মতে ২০ আগস্ট ভোরে টঙ্গী চেরাগ আলী থেকে সরোয়ার খাঁ কে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী সময়ে সরোয়ারকে নিয়ে পল্টন ও নর্দা এলাকায় অভিযান করে দুলাল, আনোয়ার, আমির, নাসির, ইমন ও রমজানদের গ্রেফতার করা হয়। ঐ দিনেই (২০ আগস্ট) রিমান্ডের আবেদনসহ গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সোহাগ, ইকবাল ও দুলাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে অন্য ৮ জন অভিযুক্তকে ৪ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
তাদের অপরাধের কৌশল ও ধরণ সম্পর্কে এসি কোতয়ালি মোঃ সাইফুল আলম মুজাহিদ জানান, গ্রেফতারকৃতরা একটি গ্রুপ তৈরি করে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় তারা ঠিক করে নেয় কোন এলাকায় ছিনতাই করবে। সে মোতাবেক নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান নিয়ে টার্গেটকে অনুসরণ করে। অতপর ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে টার্গেটের দেহ তল্লাশি করার নাম করে টাকা পয়সা ও মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেয়।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।