ডিএমপি নিউজ: ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড প্রেজেন্টস ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ছাত্রী তাহমিনা অথৈ। পঁচিশ হাজার প্রতিযোগিকে পেঁছনে ফেলে ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ক্রাউন জিতে নিয়েছেন তাহমিনা।
১৯ ডিসেম্বর কম্বোডিয়াতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি ২০১৭ এর গ্র্যান্ড ফিনালে। বাংলাদেশ থেকে বিজয়ী হয়ে তাহমিনা অংশ নেবেন ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত লড়াইয়ে। বাংলাদেশের আলোচিত এই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এর ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী তাহসিন ওয়াজেদ এশা আর দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি এর ছাত্রী ফাতেমা ইয়াসমিন লিয়া।
এছাড়া বেষ্ট লুক ষ্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি এর ফারহানা ইয়াসমিন আনিকা, বেষ্ট ষ্মাইল শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটি এর অনিন্দিতা মিমি, বেষ্ট হেয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ফরিদপুর এর শারমিন হেনা, বেষ্ট ষ্কিন ইষ্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটি এর নূসরাত জাহান খন্দকার মেঘনা, বেষ্ট পার্সোনালিটি ঢাকা সিটি কলেজ এর বিবিএ এর ছাত্রী আয়শা নূদরাত, মোষ্ট ষ্টাইলিশ ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এর বিবিএ মার্কেটিং এর শিক্ষার্থী সাদিয়া সামাদ শর্মি এবং মিস কনজিনিয়ালিট ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এর প্রীতি আহাদ নির্বাচিত হয়েছেন।
সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নির্বাচিত একশো মিস ইউনিভার্সিটি চূড়ান্ত লড়াইয়ে অংশ নেবেন। আর এই একশো সুন্দরীদের নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল গ্রুমিং শুরু হবে ২৩ নভেম্বর কোরিয়াতে। কোরিয়াতে যাওয়ার জন্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশ নেওয়া প্রতিযোগিদের মধ্য থেকে পনের জনকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। সেখান থেকে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একজনের মাথায় তুলে দেওয়া হয়েছে ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর মুকুট।
শুক্রবার সন্ধ্যা ০৬ টায় চ্যানেল আই ভবনে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত হন বিজয়ী তাহমিনা। চূড়ান্ত পর্বে কম্বোডিয়াতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি-২০১৭ এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে যিনি বিজয়ী হবেন- তিনি সারা বিশ্বে জাতিসংঘের প্রতিনিধি হয়ে ছড়াবেন শান্তির বার্তা। জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় এই সুন্দরী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে গত ২৮ বছর যাবত। এবার বসছে প্রতিযোগিতার ২৯ তম আসর।
জাতিসংঘ সারাবিশ্বের শান্তি বিষয়ে কাজ করে। তাই তাদের পিস কিপিং প্রজেক্টে সারাবিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ে পডুয়া মেয়েদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্যে এই সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের মাধ্যমে খুঁজে বের করা হবে এমন একজনকে যিনি শুধু সৌন্দর্যেই বিচারেই নয় সেই সাথে পড়াশোনা, সংষ্কৃতি এবং সামাজিক ক্ষেত্রেও স্বাক্ষর রাখবেন নিজের মেধার। বাংলাদেশে এবারের প্রতিযোগিতার আয়োজক প্রতিষ্ঠান অপূর্ব ডটকম। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আলোকচিত্র শিল্পী অপূর্ব আবদুল লতিফ। আয়োজন সম্পর্কে বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রজেক্ট হওয়ায় এই প্রতিযোগিতার গুরুত্ব অনেক বেশি। নিরপেক্ষ বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা বিজয়ী নির্বাচিত করতে পেরে আনন্দিত।’ গ্র্যান্ড ফিনালেতে প্রধান বিচারক ছিলেন এয়ার লাইন্স ব্যক্তিত্ব হানিফ জাকারিয়া, অপূর্ব আবদুল লতিফ, আনন্দ আলো সম্পাদক রেজানুর রহমান, ফ্যাশন ডিজাইনার তামিমা শামস, ফ্ল্যাগ গার্ল প্রিয়তা ইফতেখার, ২০১৫ এর ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি মুনজেরী হাসান এবং আবৃত্তি শিল্পী রুপা চক্রবর্ত্তী।
এবারের ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ইভেন্ট পার্টনার টেলিপ্রেস। গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রত্যাশা করেন বাংলাদেশের মেয়েরা তাদের ট্যালেন্ট দিয়ে বিশ্বজয় করবে। নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নারী মুক্তির বিশ্ব দরজা খুলে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন ইকবাল সোবহান চৌধুরী। জাতীয় প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বাংলাদেশের নারীরা সব জায়গায় এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন বাংলাদেশের মেয়েদেরকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার এই প্রতিযোগিতার প্রশংসা করেন। ডায়মন্ড ওর্য়াল্ড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর দিলীপ কুমার আগারওয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়ে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান হয়ে যাতে বিশ্ব শান্তি মিশনে জাতিসংঘের হয়ে কাজ করতে পারে সেই জন্যে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি মেধাবি এবং সত্যিকার অর্থে যে সুন্দরী তাকে নির্বাচিত করার।’
এবারের ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি প্রতিযোগিতার অন্যতম ষ্পন্সর ইয়ামাহা এর পক্ষে অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসিআই মোটরস এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সুব্রত রঞ্জন দাস বলেন, ‘ইয়ামাহা সবসময় তারুণ্যের প্রতীক। তাই ইয়ামাহা সবসময়ই তরুণদের সাথে থাকবে।’ বইবাজার এর সিইও রেজাউল করীম অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের জন্যে তাদের প্রকাশিত বইয়ের ওপরে ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়ার ঘোষণা দেন। ওয়ার্ল্ড মিস ইউনিভার্সিটি এর আয়োজক এবং প্রজেক্ট ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রাজু আলীম।