কক্সবাজার বিমান বন্দরে গতকাল শনিবার এই প্রথম একটি আন্তর্জাতিক বোয়িং বিমান অবতরণ করেছে। কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নীত করণের কাজ শেষ না হতেই পরীক্ষামূলক ভাবে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের সূচনা হল। বিমানটি ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে উড্ডয়নের মাত্র ৩৫ মিনিটেই বোয়িং বিমানটি কক্সবাজার বিমান বন্দরে এসে অবতরণ করে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় বিমানটি অবতরণ করে। ঘন্টা খানেক সময় পর বিমানটি ঢাকার উদ্দেশ্যে উড়াল দেয়।
আগামী ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কক্সবাজার সফরের এক সপ্তাহ আগে কক্সবাজার বিমান বন্দরে আন্তর্জাতিক বোয়িং বিমানের অবতরণ দেশবাসীর জন্যই সু-খবর বলে মনে করেন সচেতন মহল। কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের উন্নীত করণ প্রকল্পটির যে কাজ চলছে তা শেষ হবার নির্ধারিত সময় হচ্ছে ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি। কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা মনে করছেন- প্রকল্পের কাজ শেষ হবার আগেই কক্সবাজার বিমান বন্দরে বোয়িং বিমানের অবতরণ কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের বিকাশকে আরো গতিশীল করে তুলবে।
বিমান বন্দর সুত্রে জানা গেছে, বোয়িং-৭৩৭-৮০০ সিরিজের আন্তর্জাতিক বিমানটি ২০০ যাত্রীর আসন বিশিষ্ট। এটি বাংলাদেশ বিমানের এই সিরিজের সবচেয়ে বড় বিমান। এই বিমান দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হয়। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে গতকাল বোয়িং বিমানটির অবতরণ ছিল পরীক্ষামূলক। বিমানের ২০০ আসনের মধ্যে মাত্র জনা বিশেক পদস্থ কর্মকর্তা রাজধানী ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসা-যাওয়া করেছেন।
জানা গেছে, তন্মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন, সিভিল এভিয়েশনের সদস্য এয়ার কমোডর মুস্তাফিজ এবং বাংলাদেশ বিমানের চীফ ইঞ্জিনিয়ার সহ অন্যান্যরা ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ২০১৫ সালের ২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কক্সবাজার বিমান বন্দরের কাজের উদ্ভোধন করেছিলেন। প্রকল্পটিতে ব্যয় হচ্ছে ৫৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। উক্ত অংকের টাকা সরকারের (জিওবি) অর্ধেক এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অর্ধেক। প্রকল্পে বর্তমানে পর্যাপ্ত অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। কাজ তদারকির জন্য কুরিয়া ও বাংলাদেশের যৌথ একটি প্রকৌশল কোম্পানী রয়েছে এবং সেই সাথে বুয়েটেরও একটি তদারকি দল রয়েছে।
কক্সবাজার বিমান বন্দরের ব্যবস্থাপক সাধন কুমার মহন্ত জানান-একটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের রানওয়ে কমপক্ষে ১০ হাজার ফুট দীর্ঘ হতে হয়। ঢাকা বিমান বন্দরের রানওয়ে হচ্ছে ১০ হাজার ৫০০ ফুট দীর্ঘ। আর কক্সবাজার বিমান বন্দরে জমির অভাবে করতে হচ্ছে ৯ হাজার ফুটের রানওয়ে।
তিনি আরও জানান, এখন থেকে বড় বড় বিমান উঠানামা করতে পারবে। বিদেশ থেকে সরাসরি পর্যটকদের কক্সবাজারে আসা-যাওয়ায় সুবিধা হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ গুলোর বিমান চলাচলে মাঝপথে জ্বালানী নেয়ার সুযোগেরও সৃষ্টি হবে।