ডিএমপি নিউজঃ রাজধানীর কদমতলী এলাকায় ফ্রিফায়ার গেইম খেলাকে কেন্দ্র করে কলেজছাত্র ভিকটিম রাকিবুল হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করাসহ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রাপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর কদমতলী থানা পুলিশ। ভিকটিম রাকিবুল শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ রবিন ও রাসেল।
কদমতলী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে ডিএমপি নিউজকে বলেন, গত ১৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখ সকাল ১০:৪৫টায় কদমতলী থানার মিনাবাগ ০২নং গলির পরিত্যক্ত ময়লার ভাগারের মধ্যে ১৯/২০ বছরের অজ্ঞাতনামা একটি ছেলের লাশ পাওয়া যায়। কদমতলী থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে ভিকটিমের আত্মীয়-স্বজনদের জানায়। আত্মীয়-স্বজন ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমের লাশ শনাক্ত করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কদমতলী থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়।
তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তকালে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়। অতঃপর শনিবার (১৬ এপ্রিল ২০২২) শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ এলাকা থেকে হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত রবিনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে ওইদিনই কদমতলী থানা এলাকা হতে তার আপন ছোট ভাই রাসেলকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, অভিযুক্ত রবিন ইন্টারনেট সংযোগকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতো। অভিযুক্ত রবিন ও ভিকটিম রাকিবুল মোবাইলে ফ্রিফায়ার গেইমে আসক্ত ছিল। রবিনের স্মার্ট ফোন না থাকায় তার আইডি ভিকটিম রকিবুলকে ৮,০০০/-টাকায় বিক্রি করে দিতে বলে। কিন্তু ভিকটিম রাকিবুল আইডিটি বিক্রি না করে রবিনের আইডি ব্যবহার করে নিজেই খেলতে থাকে। গত ১৪ এপ্রিল ২০২২ তারিখ দুপুর অনুমান ০৩:০০টায় ভিকটিম রাকিবুল কদমতলী থানার মিনাবাগ এলাকায় অভিযুক্ত রবিনদের ভাড়া বাসায় রবিনের সাথে দেখা করতে আসে। রবিন দেখতে পায় ভিকটিম রাকিবুল তার আইডিটি ব্যবহার করে গেইম খেলছে । পরবর্তীতে রবিন উত্তেজিত হয়ে ভিকটিম রাকিবুলকে ড্রয়ার থেকে গোপনে ইন্টারনেটের তার বের করে পিছন থেকে আচমকা গলায় পেঁচিয়ে হেঁচকা টান দেয়। ফলে ভিকটিম রাকিবুল খাটের উপর ঢলে পড়ে। অতঃপর রবিন ভিকটিম রাকিবুলের পিঠের উপরে বসে তার গলায় পেঁচিয়ে আরো জোরে টান দিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর ভিকটিমের মৃতদেহ তার ঘরের ভিতর ওয়ারড্রোবে লুকিয়ে রাখে। রাত অনুমান ০২:৩০/০৩:০০টায় অভিযুক্ত রবিন তার ছোট ভাই রাসেলকে ঘটনাটি জানায়। পরবর্তীতে তারা ভিকটিম রাকিবুলের লাশ ওয়ারড্রোব হতে বের করে ধরাধরি করে তাদের বাসার ছাদে উঠায় এবং উত্তর পাশের টিন সেট বাড়ির টিনের চালের উপর দিয়ে নিয়ে খালি ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়।
গ্রেফতারকৃতদের কদমতলী থানার রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে মর্মে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ, পিপিএম এর নির্দেশনা ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রোমানা নাসরিন ও সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহ আলম এর তত্ত্বাবধানে কদমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রলয় কুমার সাহা এর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।