ঢাকাই ছবির ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি হচ্ছে রাজ্জাক-কবরী। সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আবির্ভাব’ ছবিতে এ জুটিকে দর্শক পর্দায় প্রথম দেখেন। এ ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সাফল্য পাওয়ায় ‘রাজ্জাক-কবরী’ জুটিকে দর্শক গ্রহণ করে নেন। এরপর দুজন জুটি হয়ে অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন। এমনকি একটা সময়ে এসে সাংবাদিকরা লিখতে বাধ্যও হয়েছিলেন ‘বোরিং জুটি রাজ্জাক কবরী’।
কিন্তু প্রযোজকদের কাছে এ জুটির ব্যাপক চাহিদা ছিল, তাই তারা এ বোরিং জুটিকে নিয়েই ছবি নির্মাণ করতেন। এ জুটির মুখের প্রেমময় সংলাপকে পর্দার এ পাশের প্রেমিক-প্রেমিকারা সবসময়ই নিজের বলে মনে করেছেন। নিজেদের জীবনের আবেগীয় মুহূর্তে সেসব সংলাপ প্রয়োগ করেছেন। এখনো করে থাকেন। পৌরষদীপ্ত চেহারার অভিনেতা রাজ্জাক আর মিষ্টি হাসির মধু ছড়ানো কবরীর সিনেমাগুলোকে অনুসরণ করেই কাটিয়ে দেয়া যায় জীবনের বর্ণিল সব হলুদ বসন্ত।
রাজ্জাক-কবরী জুটির পর্দায় প্রেমপূর্ণ ক্ল্যাসিক সংলাপগুলো একসময় প্রেমিকদের মুখস্থ ছিল। প্রেমের সুখ অথবা খঁনসুটি দুটোই নান্দনিক অভিনয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন রাজ্জাক-কবরী জুটি। ‘স্মৃতিটুকু থাক’ ছবির ‘মনতো ছোঁয়া যাবে না’ অথবা ‘আবির্ভাব’ ছবির ‘আমি নিজের মনে নিজেই যেন গোপনে ধরা পড়েছি’ অথবা ‘নীল আকাশের নীচে’ ছবির ‘প্রেমের নাম বেদনা, সে কথা বুঝিনি আগে/ দুটি প্রাণের সাধনা কেন যে বিধুর লাগে।’
আমরা সবসময় সময়ের আবেদন মেনে চলতে পছন্দ করি। কোন গানটা আপনার ভালো লাগবে আর কোনটা না সময়ই কিন্তু আপনার মনকে উসকে দেবে। মন ভালো থাকলে কত রকম সুন্দর স্মৃতি মনের মাঝে লুটোপুটি খায় সেই আবেদন অন্য কোথাও থেকে ধার করবার কোনো প্রয়োজন হয়নি আমাদের প্রেমিক যুগলদের। সামনেই রাজ্জাক-কবরীর গানে তার অনবদ্য প্রকাশ। আবার মন খারাপের একেকটা দিন যখন নিকষ কালো মেঘলা লাগে তখনো হাত ধরে পথ দেখান রাজ্জাক-কবরী জুটি। বাঙালি মাত্রেই রাজ্জাক-কবরী জুটির অপূর্ব আবেদন থেকে বের হয়ে আসার কোনো পথ নেই।