বিশ্বজুড়ে এখন আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। স্বাস্থ্যে আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতে অবাধে রোগ না ছড়ায় সেজন্যই এই ঘোষণা বলে জানিয়েছে তারা। ডিসেম্বরের শেষে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম সংক্রমণের খবর মেলে। তারপর ক্রমশ অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নোভেল করোনা ভাইরাস। এখনও নেই ভাইরাস প্রতিরোধক ভ্যাকসিন। মজুত নেই নির্দিষ্ট ওষুধও। নতুন বছরের গোড়াতেই আতঙ্কের গ্রাসে প্রায় গোটা বিশ্ব।
ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে উহানসহ চীনের বহু শহর এখন তালাবন্দি। প্রায় ৫ কোটি মানুষ, বাইরের জগত থেকে বিচ্ছিন্ন। বিভিন্ন দেশ, চীন থেকে নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনছে। চীন ফেরত কেরালার ১ ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তথ্য বলছে এখনও পর্যন্ত, করোনায় আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা প্রায় ২২০। আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ১০ হাজার। আশঙ্কাজনক অবস্থা প্রায় দেড় হাজার রোগীর।
ভারত, জাপান, জার্মানি, কানাডা, আমেরিকা, ভিয়েতনামসহ ১৮টি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০০। জাপান, জার্মানি, আমেরিকা, ভিয়েতনামে প্রায় ১০টি ক্ষেত্রে ১জনের থেকে অন্যজনের দেহে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সর্দি-জ্বর-শ্বাসকষ্ট। শেষে ফুসফুস বিকল। তারপর মৃত্যু।
২০০২-০৩ সালে করোনার মতো একই উপসর্গ নিয়ে আসা সার্সে, চীনে প্রায় ৮০০ জন মারা যান। সেইসময় চীনের বিরুদ্ধে গোপনীয়তার অভিযোগ উঠলেও এবার তা হয়নি। করোনা-মোকাবিলায় ৪০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে চীন। ১০ দিনের মধ্যে আস্ত একটা হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। অসুখের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেইজিংয়ের ভূমিকার প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এক দেশ থেকে অন্য দেশে অসুখ ছড়িয়ে পড়া আটকাতেই, আন্তর্জাতিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, চীনে যাওয়া বা চীনের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ রাখার কোনও পরামর্শ তারা দিচ্ছে না বলে জানিয়েছে WHO। সার্সের সময় সারা বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হয়, প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। বিশ্ব অর্থনীতিতে চীনের আধিপত্য বাড়ায় এবার লোকসানের পরিমাণ আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা।