করোনাভাইরাস হলো একটি ছোঁয়াচে রোগ। করোনা সংক্রমণে এখন গোটা বিশ্ব জর্জরিত। কোন কিছুতেই এর সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না।
যে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে কারও যদি আগে থেকেই শারীরিক জটিলতা থাকে তাহলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিটা বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা রোগীদের মধ্যে সুস্থতার হার বাড়লেও কারও কারও জন্যে এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে, কোভিড-১৯ এর বাড়াবাড়ির মূলে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। যার ফলে অনেক রোগীই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন।
এ সময়টাতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভাসে যত্নবান হতে হবে বেশি। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত শাকসবজি ও ফলমূল যোগ করা দরকার।
করোনার এই সময়ে বাজারে যাওয়া-আসা করা ঠিক নয়। সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনের খাদ্যতালিতায় নির্দিষ্ট কিছু খাবার রাখতে পারেন।
যেমন-
ওটমিল: ওটমিল শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ কমায়, সেই সঙ্গে ইনসুলিনের পরিমাণ উন্নত করে। নিয়মিত এ খাবারটি খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তরমুজ: তরমুজ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ডিম: প্রোটিনসমৃদ্ধ এ খাবারটি দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। সুস্থ থাকতে ডায়াবেটিস রোগীরা এ সময় প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে পারেন।
বীজ: বিভিন্ন ধরনের বীজ যেমন-শিম, সূর্যমুখীর বীজ, কুমড়ার বীজ, মটরশুটি ইত্যাদি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। এগুলো রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে ভূমিকা রাখে।
রসুন: রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত রসুন খেতে পারেন। কাঁচা, সালাদে মিশিয়ে কিংবা কোনো খাবারে এই উপাদানটি মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ার পাশাপাশি বেড়ে যায় রোগের জটিলতাও। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ডায়াবেটিস রোগীদের যেসব নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি-
১. মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোওয়া, শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ কোভিডের সুরক্ষাবিধি মেনে চলুন।
২. এ সময় বাড়ির বাইরে না যাওয়াই ভালো। বাড়ির কাজ অন্যান্য সুস্থ সদস্যদের দিয়ে করান।
৩.সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন, বাড়ি ফেরার সঙ্গে সঙ্গে ভালো করে হাত-পা-মুখ ও ব্যবহৃত পোশাক পরিবর্তন করে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
৫. ধূমপান-মদ্যপান বন্ধ রাখুন। এগুলি রোগের জটিলতা আরও বাড়ায়। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
৬. বাড়িতে কোন অসুস্থ ব্যক্তি থাকলে তার থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
৭. সকাল -সন্ধ্যায় ব্যায়াম করুন। এতে ওজন নিয়ন্ত্রিত থাকবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।
৮. হঠাৎ করে সুগার বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
করোনার উপসর্গ দেখা দিলে যা করবেন-
১. করোনার সামান্য উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
২. ভয় না পেয়ে, করোনা শনাক্তকরনের পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী আলাদা ঘরে থাকুন।
৩. আইসোলেশনে থাকার সময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিসের ওষুধ খান।