ডিএমপি নিউজঃ আপনি কিংবা আপনার আত্মীয়-স্বজন অথবা আশপাশের কোন ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে বা এমন সন্দেহ হলে প্রথমেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে আশপাশের লোকজন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে রাখতে হবে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞ ও ডাক্তাররা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম লক্ষণ হলো জ্বর এবং শুকনো কাশি। আপনার এরকম লক্ষণ দেখা দিলেই ‘সেল্ফ-আইসোলেশনে’ চলে যান – অর্থাৎ নিজেকে অন্যদের সংস্পর্শ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে ফেলুন। এর উদ্দেশ্য হলো যাতে আপনার বাসা, পরিবার, কর্মস্থল, বা সামাজিক পরিমন্ডলে অন্য যে মানুষেরা আছেন – তাদের মধ্যে ভাইরাস ছড়াতে না পারে।
এই সেল্ফ আইসোলেন কিভাবে করবেন আলোচনা করা যাক-
আপনাকে ঘরে খাকতে হবে-
প্রথমে আপনাকে ঘরে থাকতে হবে। কর্মস্থলে, স্কুলে বা লোকসমাগম হয় এমন যে কোন প্রকাশ্য স্থানে যাওয়া বন্ধ করে দিন। যে কোন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট – অর্থাৎ বাস, ট্রেন, ট্রাম, ট্যাক্সি বা রিকশা যাই হোক না কেন ভ্রমণ করা বিরত থাকুন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ হতে রক্ষা পেতে আপনাকে যা করতে হবে-
কেমন ঘরে থাকতে হবে
এমন একটা ঘরে থাকুন যাতে জানালা আছে, ভালোভাবে বাতাস চলাচল করতে পারে। বাসার অন্য লোকদের থেকে আলাদা থাকুন। আপনাকে কেউ যেন ‘দেখতে না আসে’ তা নিশ্চিত করুন। এ ক্ষেত্রে আপনার যদি বাজার-হাট করতে হয়, বা কোন ওষুধ বা অন্য কিছু কিনতে হয় – তাহলে অন্য কারো সাহায্য নিন। আপনার বন্ধু, পরিবারের কোন সদস্য বা ডেলিভারি-ম্যান এটা করতে পারে। যারা আপনার জন্য খাবার বা জিনিসপত্র নিয়ে আসবে, তাদের বলুন আপনার ঘরের দরজার বাইরে সেগুলো রেখে যেতে।
বাড়ির অন্য লোকদের করণীয়
ধরুন, আপনি এমন একটি বাড়িতে আছেন যেখানে একটি ‘কমন রান্নাঘর’ আছে যা সবাই ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে যার করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিয়েছে তার এমন সময় সেই রান্নাঘরটি ব্যবহার করা উচিত যখন অন্য কেউ সেখানে নেই। আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তির উচিত হবে রান্নাঘর থেকে খাবার নিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে খাওয়া। ঘরের মেঝে, টেবিল চেয়ারের উপরিভাগ – এমন ‘সারফেস’গুলো প্রতিদিন তরল সাবান বা অন্য কোনো ক্লিনিং প্রোডাক্ট দিয়ে পরিষ্কার করুন।
নিজেকে সম্পূর্ণ আলাদা করা সম্ভব না হলে আপনার করনীয়-
যদি এমন হয় যে আপনি নিজেকে পরিবারের অন্য সদস্য বা ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করতে পারছেন না, সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ হলো একে অপরের সংস্পর্শে আসা যতটা সম্ভব সীমিত করুন। যদি সম্ভব হয়, বাসার অন্য লোকদের থেকে কমপক্ষে ২ মিটার বা ৬ ফুট দূরে থাকুন। ঘুমানোর সময় একা ঘুমান। করোনাভাইরাস সংক্রমণ যাদের জন্য বেশি বিপজ্জনক হতে পারে – যেমন বয়স্ক মানুষেরা – তাদের থেকে দূরে থাকুন।
কেউ আইসোলেশনে থাকলে বাড়ির অন্যলোকদের করণীয়-
আইসোলেশনে থাকা কোন ব্যক্তির সাথে যারা এক বাড়িতে বসবাস করছেন, তাদের জন্য পরামর্শ হলো: তাদের ঘন ঘন হাত ধুতে হবে।সংক্রমণ এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে
হাত ধোয়ার নিয়ম হলো, সাবান ও পানি ব্যবহার করে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে – বিশেষ করে সংক্রমিত কারো সংস্পর্শে আসার পর।
যে সকল জিনিষ শেয়ার করা যাবে না-
আপনার বাড়িতে কেউ আইসোলেশনে থাকলে কোন তোয়ালে, টুথপেস্ট, সাবান, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার বা এরকম কোন টয়লেট্রিজ সবাই মিলে ব্যবহার করা উচিৎ নয়।
আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তির আলাদা একটি বাথরুম ব্যবহার করা উচিৎ। তা সম্ভব না হলে নিয়ম করুন যে যিনি আইসোলেশনে আছে – তিনি বাথরুম ব্যবহার করবেন সবার শেষে, এবং ব্যবহারের পর সম্ভব হলে সেটি ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন।
যিনি আইসোলেশনে আছেন তার ফেলা বা সংস্পর্শে আসা সব রকম আবর্জনা একটি বিনব্যাগে ভরে তা আবার আরেকটি ব্যাগে ভরুন।
যদি তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিশ্চিত হয় – তাহলে এই আবর্জনা কীভাবে ফেলতে হবে, সে ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা