ডিএমপি নিউজঃ মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধ যুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যুদ্ধের ময়দানে যোদ্ধাহত সৈন্যদের জন্য যেমন ফিল্ড হাসপাতাল অগ্রণী ভূমিকা রাখে ঠিক করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধ যুদ্ধে যোদ্ধাহত অর্থাৎ এই যুদ্ধে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় বরাবরই নিবেদিত আছে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল।
পুলিশের এই গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবার চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। বর্তমান পরিস্থিতি কারও অনুকুলে না থাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে আগতদের হাসপাতালে প্রবেশের গেটে স্বয়ংক্রিয় ডিসইনফেকশন (জীবাণুনাশক) স্প্রে বসানো হয়েছে। যাতে করে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আগতদের প্রবেশের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো হচ্ছে। আগে এই ডিসইনফেকশন করার কাজটি ম্যানুয়ালি করা হতো। প্রবেশের সংখ্যা বাড়তে থাকায় অনেক জনবলের প্রয়োজন দেখা দিত।
তখনই এই পদ্ধতিকে আধুনিকায়নের বিষয়ে ভাবলেন পুলিশ হাসপাতালে কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাইফুল ইসলাম সানতু। তিনি ইউটিউবে অটো ডিসইনফেকশন গেট তৈরির ভিডিও দেখে নিজেই শুরু করলেন তৈরির কাজ। পেলেন সফলতাও। ১২ এপ্রিল থেকে সফলতার সাথে পুলিশ হাসপাতালে আগতদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই জীবাণুমুক্ত হচ্ছে তার বানানো গেটের মাধ্যমে।
এই উদ্ভাবনী উদ্যোগের কথা জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম ডিএমপি নিউজকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি ডিসইনফেকশন গেটের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে ইউটিউবে তুরস্কের একটি ডিসইনফেকশন গেট তৈরির ভিডিও দেখি। সেই গেট তৈরি ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল। যেহেতু পুলিশ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ চলছে। তাই আমি ভাবছিলাম এখানকার কোনো জিনিসপত্র কাজে লাগিয়ে গেটটি তৈরি করা যায় কি-না। তখনই আমি এটি তৈরি শুরু করি। একটি মোটর পাম্প, পানির ট্যাংক এবং পানির পাইপ ব্যবহার করে গেটটি বানানো হয়েছে। পানির ট্যাংকে পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক ও রসায়নবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী নানা অনুপাতে জীবাণুনাশক দেয়া হয়। এতে করে অতিরিক্ত লোকের প্রয়োজন হয় না।
চিকিৎসাসেবীদের জন্য তৈরি ডিসইনফেকশন গেট কার্যকারী হওয়ায় কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পরিচালক ডিআইজি ড. হাসানুল হায়দার এর নির্দেশনায় হাসপাতালে আগত যানবাহনগুলোকে জীবাণুমুক্ত করণের জন্য ভেহিক্যাল ডিসইনফেকশন গেট তৈরি করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ মে) থেকে এই ডিসইনফেকশন গেট দিয়ে যানবাহনগুলো জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। এতে করে চিকিৎসাসেবীদের পাশাপাশি এ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য গাড়িগুলোও জীবাণুনাশক দিয়ে জীবানুমুক্ত করা হচ্ছে।