প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সর্বসাধারণকে মসজিদ/উপাসনালয়ে না গিয়ে ঘরে ইবাদত/উপাসনা করতে নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ আদেশ অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
সোমবার (৬ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জনসমাগমের মাধ্যমে এ ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে। আমাদের পাশ্ববর্তী দেশগুলোতেও এ ধরনের বিস্তার ও প্রাণহানির ঘটনার উদাহরণ বিদ্যমান। ইতোমধ্যে মুসলিম স্কলারদের অভিমতের ভিত্তিতে পবিত্র মক্ক মুকাররমা ও মদিনা মুনাওয়ারাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের মসজিদে মুসল্লিদের আগমন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ এ রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার জোর পরামর্শ দিয়েছেন।
আরো জানানো হয়, ২৯ মার্চ ২০২০ তারিখে ইসলামি ফাউন্ডেশনের আহবানে এ বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ মিলিত হয়ে মসজিদে মুসল্লীদের উপস্থিতি সীমিত রাখার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে আহবান জানিয়েছিলেন। তৎপরবর্তীতে পরিস্থিতি দ্রৃত ভয়ঙ্কর অবনতির দিকে যাচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সকলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নিম্মোক্ত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে:
১. ভয়ানক করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদের ক্ষেত্রে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম ব্যতীত অন্য সকল মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামাজ আদায় এবং জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
২. মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজন হলে প্রতি ওয়াক্তিয়া খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ অনধিক পাঁচজন এবং জুমার জামাতে সর্বোচ্চ ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাহিরের মুসল্লী মসজিদের ভিতরে জামায়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
৩. একই সাথে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরকেও উপাসনালয়ের সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
৪. এ সময় বাংলাদেশের কোথাও ওয়াজ-মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলিগ তালিম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাই ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, যিকির ও দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনা করবেন।
৫. অন্যান্য ধর্মের অনুসারীগণও এ সময়ে কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে সমবেত হতে পারবেন না।
সকল ধর্মের মূলনীতির আলোকে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এই নির্দেশনা জারি করা হলো। উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ঠ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানানো হলো। কোন প্রতিষ্ঠানে উক্ত সরকারি নির্দেশ লংঘিত হলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ঠ দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।
যথাযথ কর্তপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে এ নির্দেশ জারি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।