করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গুজব রটালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুশিয়ার করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ নিয়মিত ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটর করছে। ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব ছড়ানোকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশকে ওভারসিস চায়নিজ এসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (ওসিএআইবি) কর্তৃক করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই), মাক্স, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার ইত্যাদি হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এ হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন আইজিপি।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে ঘরে থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান আইজিপি। তিনি বলেন, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যাবেন না। অতি জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আইজিপি বলেন, জনগণের সাথে পেশাদার, সহিষ্ণু ও মানবিক আচরণ করার জন্য পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আইজিপি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি ইউনিট শুরু থেকেই একযোগে কাজ করছে। পুলিশ সদস্যদের করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে। যে সকল পুলিশ সদস্য করোনা ভাইরাসে মৃত ব্যক্তিদের জানাযা ও দাফনে অংশ নিচ্ছে তাদের মধ্যে বিশেষ পিপিইসহ অন্যান্য সুরক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে।
পুলিশ করোনা রোধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। এ কাজে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রয়োজনে মসজিদের মাইকও ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় ক্যাবল টিভির মাধ্যমেও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় নিয়মিত জরুরি নির্দেশনা প্রচার করা হচ্ছে।
পুলিশ সদস্যরা জনগণের মাঝে মাক্স, স্যানিটাইজার, জীবানুনাশক বিতরণ করছে। পুলিশের গাড়ি দিয়ে সীমিত পরিসরে বিভিন্ন স্থানে জীবানুনাশক ছিটানো হচ্ছে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষদের বাড়িতে খাবারওপাঠাচ্ছে পুলিশ। টেলিফোন করলে তাদের বাড়িতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যও পাঠাচ্ছে পুলিশ।ডিএমপি, সিএমপির মত বড় বড় পুলিশ ইউনিট দুস্থদের মাঝে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করছে।
পুলিশ বিদেশ ফেরতদের তালিকা সংশ্লিষ্ট এসপিদের কাছে প্রেরণ করে নিয়মিত মনিটরের আওতায় নিয়ে এসেছে। বিদেশ ফেরতদের বাড়িগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম মনিটর করার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেল কাজ করছে। আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হবো।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ পুলিশকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করার জন্য ওসিএআইবি-কে ধন্যবাদ জানান আইজিপি। তিনি বলেন, এ সহায়তা দু’দেশের বন্ধুপ্রতীম জনগণের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।
ওসিএআইবি প্রেসিডেন্ট Zhuang Lifeng বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এ সামগ্রী খুবই সামান্য। আমরা সবসময় বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছি। ভবিষ্যতেও থাকবো।
অনুষ্ঠানে ওসিএআইবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট Feng Xiaorong, Qiu Xiaobin, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর Chen Qihua, সেক্রটারি জেনারেল Ding Tian, ডিরেক্টর Lin Zhichao, বাংলাদেশ পুলিশেরঅতিরিক্ত আইজি (এএন্ডও) ড. মোঃ মইনুর রহমান চৌধুরী, শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত আইজি আবদুস সালাম, এসবি প্রধান অতিরিক্ত আইজি মীর শহীদুল ইসলাম, ডিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) বিশ্বাস আফজাল হোসেন, অতিরিক্ত আইজি (অর্থ) মোঃ শাহাব উদ্দীন কোরেশী, এসবিতে কর্মরত অতিরিক্ত আইজি মাহবুব হোসেন এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।