তীব্র করোনা হামলায় মৃত দেহের মিছিল চলছে আমেরিকা ও ফ্রান্সে। বিশ্বের দুই তাবড় শক্তিশালী দেশকে চূর্ণ করেছে করোনাভাইরাস। অথচ ভাইরাস হামলাতেও অবিচল কমিউনিস্ট দেশ ভিয়েতনাম। তাদের অভিনব জন সুরক্ষা চেতনা ও খাদ্য সরবরাহে চমকে গিয়েছে দুনিয়া। ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসেবে চীনের প্রতিবেশী ভিয়েতনামে কোনও করোনা রোগীর মৃত্যু নেই এখনও। তবে আক্রান্ত ২০০ জনের বেশি। লকডাউন চলছে। কিন্তু খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল অটুট রাখতে তৈরি হয়েছে চালের এটিএম।
এর মাধ্য়মে এলাকা ভিত্তিক নির্দিষ্ট হারে প্রতি জনকে চাল দিচ্ছে ভিয়েতনাম কমিউনিস্ট সরকার। ফলে প্রধান খাদ্য অর্থাৎ চালের যোগান বজায় থাকায় লকডাউন ভাঙার কোনও খবর নেই। এতেই আটকে গিয়েছে করোনাভাইরাস। ইতিহাস এমনই, মার্কিনি ও ফরাসি সেনা তাদের শত্রু দেশ ভিয়েতনামের স্বাধীনতা লড়াইয়ে গণহত্যা সংঘটিত করেছিল। পাঁচ দশক আগের সেই ঘটনা। রক্তাক্ত গেরিলা সংগ্রামে গোপনে খাদ্য যোগান ও রণকৌশল বজায় রাখে কমিউনিস্টদের ভিয়েতকং গেরিলা বাহিনি।
দুই ধনতান্ত্রিক দেশকে নাকানি চোবানি খাওয়ায় ভিয়েতমাম। এবার করোনা মোকাবিলায় আরও কঠোর ভিয়েতনাম সরকার। চীনে করোনা হামলা গত বছর ডিসেম্বরে শুরু হন। তারপর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে লকডাউনে যায় ভিয়েনাম। শুরু হয় স্বাধীনতার সেই হেরিলা যুদ্ধের কায়দায় সব মোকাবিলা। তারই অঙ্গ হিসেবে চালের এটিএম তৈরি করা হয়েছে।
বিবিসি, সিএনএন, এসিয়া নিউজ নেটওয়ার্কের খবর, ভিয়েতনামে ছড়িয়ে থাকা চালের এটিএম থেকে ২৪ ঘন্টা চাল পাওয়া যায়। প্রতিবার বোতাম টিপলে দেড় কেজি করে চাল বেরিয়ে আসবে়। এই দেশে এমন চালের এটিএম নতুন কিছু নয়। কয়েক বছর আগে হো চি মিন শহরের হাসপাতালে এমন চাল এটিএম প্রথম ব্যবহার শুরু করা হন। করোনা-সংকটে কাজ হারানো গরিবদের জন্য এবার এই চালের এটিএম রীতিমতো আলোচিত হচ্ছে।
ভিয়েতনামে লকডাউন চলছে গত ৩১ মার্চ থেকে৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জীবন যাপন করতে হচ্ছে সবাইকে৷ এর ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দিনমজুরের মতো স্বল্প আয়ের সবাই পড়েছেন বিপদে৷ এখানেই বাজিমাত চাল এটিএমের। প্রয়োজনমতো চাল সংগ্রহ করা যাবে এখান থেকে।
মহল্লায় মহল্লায় এমন চাল এটিএম থাকায় খাবারের জন্য় ভিয়েতনামিরা নিশ্চিত। এই পদ্ধতি না থাকায় তীব্র করোনা হামলাতে বিপর্যস্ত আমেরিকা ইউরোপ। হাজারে হাজারে মৃত। অভিনব চাল এটিএম ভিয়েতনামকে এমন দুর্গতি থেকে রক্ষা করছে। ছড়ায়নি সংক্রমণ ।