ডিএমপি নিউজঃ ২৬ আগষ্ট ২০২১ তারিখে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় (কলাম ২-৪) “কর্মকর্তার ‘ভুলে’ শাস্তির মুখে ২১৩ এসআই” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে ৮৭১ জন বিভাগীয় এসআই (নিরস্ত্র) প্রশিক্ষণার্থী টাঙ্গাইল পিটিসিতে ৬ (ছয়) মাস মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে যোগদান করেন, যা বিগত ১৪ জুন ২০২১ পর্যন্ত চলমান ছিল। বিগত ১৩ মে ২০২১ তারিখে ২১২ জন প্রশিক্ষণার্থী নিজেদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দলবদ্ধভাবে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হতে পলায়ন করে এবং ১৫ তারিখ বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে হাজির হয়। এছাড়া গত ৯ মে ২০২১ তারিখে ১ (এক) জন প্রশিক্ষণার্থী নিজের ইচ্ছায় বিনা অনুমতিতে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হতে পলায়ন করে এবং ১২ তারিখে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে হাজির হয়। উল্লেখ্য, ১৪ মে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। তখন কোভিড এর সেকেন্ড ওয়েভের মাঝে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে সার্বিক কার্যাবলি/চলাচলে বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ৫ মে ২০২১ তারিখে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে ঈদের সময়ে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্ব স্ব কর্মস্থলে অবস্থানের জন্য নির্দেশনা বলবৎ ছিল এবং এ সময়ে গণপরিবহনও বন্ধ ছিল।
সরকারের উক্ত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্ব-স্ব কর্মস্থলে অবস্থানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। অথচ সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ছুটি মঞ্জুর না করা সত্ত্বেও বিনা অনুমতিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ৮৭১ জনের মধ্যে ২১২ জন প্রশিক্ষণার্থী দলবদ্ধ হয়ে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হতে পলায়ন করেন। তারা সরকারি সিদ্ধান্ত এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা সুস্পষ্টভাবে লংঘনকরত বাংলাদেশ পুলিশের মতো একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর বিভাগীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে মারাত্মক অপরাধ করেছেন, যা পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণে শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন।
প্রকাশিত রিপোর্টে প্রশিক্ষণার্থীদের শাস্তি প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। শুধুমাত্র প্রশিক্ষণে বেআইনি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে অনুপস্থিত থাকার জন্য ২১৩ জন প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া শারীরিক অসুস্থতা ও বিভিন্ন অভিযোগে ৬ (ছয়) জনকে প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, অবশিষ্ট ৬৫২ জন প্রশিক্ষণার্থী সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করে সফলতার সাথে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটে পদায়িত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার বিষয়ে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ গণমাধ্যমের দায়বদ্ধতার সুস্পষ্ট লংঘন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরনের সংবাদ পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে স্বেচ্ছাকৃতভাবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের উসকানির শামিল বলে প্রতীয়মান হতে পারে, যা ফৌজদারি অপরাধ।
বাংলাদেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শৃঙ্খলা বাহিনী সম্পর্কে এ ধরনের রিপোর্টে করার ক্ষেত্রে দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকা কর্তৃক আরও বেশী সতর্কতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স প্রত্যাশা করে।
আজ (২৯ আগস্ট,২০২১) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া এন্ড পিআর বিভাগের এআইজি মোঃ সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে এই প্রতিবাদ জানানো হয়।