আগামীকাল পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ ১৪২৪ বরণ করতে সমগ্র বাঙালি জাতি কাল উৎসবে মেতে উঠবে।আজ চৈত্রসংক্রান্তির মাধ্যমে ১৪২৩ সনকে বিদায় জানানো হচ্ছে। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে কাল যুক্ত হবে নতুন বছর ১৪২৪। স্বাগত বাংলা নববর্ষ।
নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ জাতির উদ্দেশে বাণী দিয়েছেন।
মূলত মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে বাংলা সন গণনার শুরু হয় । হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসন ভিত্তি করে প্রবর্তন হয় নতুন এই বাংলা সন। ১৫৫৬ সালে কার্যকর হয় বাংলা সন।প্রথমদিকে ফসলি সন নামে থাকলেও, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে।
পাকিস্তান শাসনামলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের । ষাটের দশকের শেষে তা রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে বিশেষ মাত্রা পায় ।১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। সম্প্রতি (২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর) ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দিয়েছে।
বাংলা নববর্ষে ব্যবসায়ীদের ‘হালখাতা’ রীতি এখনও দেশের সব জায়গায় চলমান। এদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির আমেজ নিয়ে উৎসবের পরিধির আরো বিস্তার ঘটিয়েছে এই ‘হালখাতা’। গ্রামে-গঞ্জে আজও অনুসরণ করছে বাংলা বর্ষপঞ্জি। একসময় কেবল গ্রামাঞ্চলেই পয়লা বৈশাখের উৎসবে মেতে উঠতো মানুষ। নানা অনুষ্ঠান, মেলা আর হালখাতা খোলার মাধ্যমে তখন করানো হতো মিষ্টিমুখ। বর্তমানে আধুনিক বাঙালি তাদের বাংলা নববর্ষকে সাজিয়ে তুলছে মাতৃভূমির প্রতিটি আঙিনায় আরও বেশি উজ্জ্বলতায়।
বাঙালির এই প্রাণের উৎসবকে ঘিরে নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে রমনা পার্কসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পুরোটাই । শুধু রাজধানী ঢাকাই নয় এ উপলক্ষে সারাদেশেই নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থা ও তাদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যৌথভাবে কাজ করছে সব সংস্থা। সার্বিক নিরাপত্তা ও নজরদারি নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে কন্ট্রোল রুম, অবজারভেশন পোস্ট ও চেক পোস্ট। আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি থাকছে গোয়েন্দা দলের সদস্য, বোমা ডিসপোজাল টিম ও মেডিক্যাল টিম।